fbpx
হোম অনুসন্ধান সৈন্য প্রত্যাহারের রহস্যাবৃত সিদ্ধান্ত আমেরিকার
সৈন্য প্রত্যাহারের রহস্যাবৃত সিদ্ধান্ত আমেরিকার

সৈন্য প্রত্যাহারের রহস্যাবৃত সিদ্ধান্ত আমেরিকার

0

হঠাৎ করে সিরিয়া ও আফগান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার রহস্য নিয়ে চেঞ্জ টিভির অনুসন্ধান প্রতিবেদন

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার ঝড় এখন ট্রাম্পের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা নিয়ে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে সব সেনা তুলে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীকে পরাজিত করা হয়েছে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাত্র কয়েক দিন আগে ট্রাম্পের বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, ‘কেউ বলছে না যে আইএস যোদ্ধারা দৃশ্যমান । তাই আমরা সেখানে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চাই।’ এর আগে গত মার্চে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘খুব শিগগির সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা তুলে নেওয়া হবে।’ তবে তখনো তিনি সময়সীমা সুনির্দিষ্ট করেননি।

উল্লেখ্য, আইএস জঙ্গি ও সন্ত্রাসী নির্মূলের লক্ষ্যে সিরিয়ায় কুর্দি ও আরবযোদ্ধাদের মিত্র হয়ে কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার পর আফগানিস্তানে অবস্থানরত সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র। উপদেষ্টাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে সিরিয়া থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার একদিন পর আফগানিস্তান নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনার কথা জানা গেল।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, ট্রাম্প এমন সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন যখন মার্কিন কর্মকর্তারা আফগান তালেবানদের সঙ্গে আলোচনায় চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে তালেবানদের পতন ঘটলেও আফগানিস্তানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে।

ট্রাম্প আকস্মিকভাবে সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর কৌশলগত মতবিরোধের কারণে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস পদত্যাগ করেন। ম্যাটিস আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি মার্কিন সেনাবাহিনীর জোরালো উপস্থিতি বজায় রাখতে চাইছিলেন। ট্রাম্প সেখান থেকেও সৈন্য প্রত্যাহার করতে পারে এমন  সম্ভাবনার কথা জানার পর পরই তিনি পদত্যাগ করেন।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৪ হাজার সৈন্য রয়েছে। এরা সামরিক জোট ন্যাটো মিশনের সঙ্গে বা আলাদা কাউন্টার টেররিজম ফোর্স হিসেবে কাজ করছে। নাম গোপন রাখার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানান, পেন্টাগন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকা বলছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাত হাজারেরও বেশি সৈন্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এসব সৈন্য প্রত্যাহারের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে বা আরব অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আসবে? যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রত্যাহার কেবলি আনুষ্ঠানিকতা নাকি নতুন কোন যুদ্ধ শুরু করার স্খানান্তরকাল? একুশ শতকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আফগান থেকে শুরু করে ইরাক যুদ্ধ এবং সিরিয়ার সংকটে সরব উপস্থিতির পেছনে যে সব স্বার্থ যুক্ত ছিল তা সম্পন্ন হয়েছে?

তথ্যমতে, আফগানিস্তানকে দেড়যুগ ধরে নিয়ন্ত্রন করেছে আমেরিকা এবং  আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক ফায়দা নিয়েছে কেবল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তালেবানদের নির্মুল করতে পারেনি তারা।

ইরাকে ২৪ লাখ ইরাকী হত্যা করার তথ্য আছে। কিন্তু নিজেদের তেল পাবার নিশ্চয়তা আর মুসলিম নেতৃত্বকে ছিন্ন-ভিন্ন করা ছাড়া গঠনমূলক কিছু করতে পারে নাই বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন।

সিরিয়া যুদ্ধের বহুমুখী পক্ষ। সিরিয়া সরকার, স্থানীয় বিরোধী শক্তি, আইএস, রাশিয়া, ইসরাইল, তুরস্ক, ইরান ও যুক্তরাষ্ট। তবে দু’- একটি দেশ ছাড়া সব পক্ষই মানবতার ধ্বংস করার কাজই করেছে। এই মুসলিম জনপদের নাগরিকদের উপর চলতি শতকের সবচে জঘন্যতম মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে এসব পক্ষাবলম্বনকারীরা।

আমেরিকার বর্তমান সিদ্ধান্তে দুটি বিষয় পরিষ্কার, যে সব মিশন নিয়ে তারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল তার অধিকাংশ অর্জন পূর্ণ হয়েছে। আরব বিশ্ব এখন পুরোপুরি  গৃহবিবাদে লিপ্ত! পক্ষান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের আশির্বাদপুষ্ট ইস্রাইল অর্জন করেছে অফুরন্ত ক্ষমতা। যুক্তরাষ্ট্রের এই সেনা প্রত্যাহারকে নতুন কোন যুদ্ধ শুরু করার নতুন পরিকল্পনা  অংশ বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *