fbpx
হোম রাজনীতি সামনে কামাল পেছনে ইউনূস!

সামনে কামাল পেছনে ইউনূস!

0

রাত পোহালেই বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক ভোট গ্রহণ শুরু হবে। এ নির্বাচনে শাসক দলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সরকার বিরোধী এই ফ্রন্টের বয়স বেশী দিন না হলেও এর সাথে স্বংশ্লিষ্ট রাজনীতিকদের অভিজ্ঞতা দীর্ঘ কয়েক দশকের। অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে নেপথ্য সংবাদ বিশ্লেষণ করে জানা যায়, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস  জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট  গঠনের নেপথ্য কারিগর। তিনি বিদেশে বসে কূটনৈতিক তৎপরতার কলকঠি নাড়ছেন এমন সমালোচনাও বিদ্যমান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সথে শাসক দলের বিরোধ ওয়ান ইলেভেনের সূত্র ধরে। সে সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা এবং রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা পরবর্তীতে রূপ নেয় প্রতিহিংসায়। তার নিজের প্রতিষ্ঠা করা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অব্যহতি দেয়া হয় তাকে। সরকারের সাথে বিরোধ বাড়তে থাকে এই গুণীজনের।  আইনের শরণাপন্ন হয়েও তিনি কোন প্রতিকার পাননি, যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দেয় পদ্মা সেতুর অর্থায়ন।

নির্বাচনে কূটনৈতিক তৎপরতা নিয়ে সব মহলে আলোচনা সরগরম। আর কূটনৈতিক তৎপরতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার পেছনে মূল কারিগর হিসেবে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন বলেও সমালোচনা আছে রাজনৈতিক মহলে।

বিএনপি-জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবে এ ধরণের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে আওয়ামী লীগ।  শুধু প্রশ্ন করেই ক্ষান্ত নয়, সমালোচনাও করছে শাসক দলের শীর্ষ নেতারা। আর সমালোচনার টেবিলে কথিত আছে, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী করা হতে পারে। পরবর্তীতে কোন আসনে উপ নির্বাচন দিয়ে তাকে সাংসদ করার পরিকল্পনা আছে বলেও শোনা যায়।  উল্লেখ্য, দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারের সাথে বিরোধ

সংবাদ বেরিয়েছিল, ওয়ান ইলেভেনে মুহাম্মদ ইউনূস কেয়ারটেকার সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ার প্রধান কারণ ছিল ওই সরকারের স্বল্প মেয়াদ। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, “সেনাবাহিনীর প্রস্তাবে আমি কেন রাজী হইনি এ বিষয়ে যে কারণ তারা উল্লেখ করেছেন তা একেবারেই কল্পনাপ্রসূত। ’

ওয়ান ইলেভেনের সমাপ্তি ঘটে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা আরোহনের মধ্য দিয়ে। সে সরকারের মেয়াদে ড. ইউনূসকে তার নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণ করা হয়।

তাকে নিয়ে সমালোচনা এখনো চলছেই। চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর নাম ফলক উন্মোচনকালে এক সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড. মুহম্মদ ইউনুসের প্ররোচণায় বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু নির্মাণের অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। ড. ইউনুস বেআইনিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ছিলেন।  তাকে বলার পরও তিনি সরলেন না। উল্টো সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। মামলায় হেরে আমেরিকায় যান। সেখানে তার প্ররোচণায় তখনকার বিশ্বব্যাংক প্রধান এ প্রকল্পের অর্থ বন্ধে অর্ডার দিয়ে যান।

জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ সেলিম সমালোচনা করেন তার। একই সাথে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেন শেখ সেলিম।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে আরো ১১টি মামলা করা হয়। ১১টি মামলাসহ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ৯০টি মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।  এভাবে সরকারের সাথে তার একটি স্থায়ী বিরোধ চলছে প্রায় এক দশক ধরে।

ঐক্যফ্রন্টের সাথে সখ্যতা

২০১৩ সালে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ড. ইউনূসের সাথে দেখা করে। তখন থেকে  তার সাথে সৌজন্য যোগাযোগ আছে বিএনপির। বর্তমানে একটি মহল মনে করে, সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্যের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনিই। তিনিই ড.কামাল হোসেনকে ঐক্যের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেন। বিএনপিকে ত্যাগ স্বীকারের পরামর্শ দিয়েছেন। তার উদ্যোগেই মার্কিন দূতাবাস তৎপর হয়েছে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রশ্নে। কিন্তু গত এক মাস ধরেই ড. ইউনূস দেশে নেই। তিনি বিদেশ থেকে কলকাঠি নারছেন বলে মনে করেন  রাজনীতি বিশ্লেষকরা । জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতিহারে তার চিন্তার প্রতিফলন আছে বলে মনে করে অনেকেই।

আন্তর্জাতিক স্বক্ষমতা নির্বাচনে প্রভাব

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিচিতি আর দশজন নোবেল বিজয়ী থেকে একটু ভিন্ন মাত্রার।  তিনি তার সামাজিক ব্যবসা আর অর্থনৈতিক বক্তৃতা নিয়ে বিশ্বের তাবৎ সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের সাথে গড়ে তুলেছেন নিবিড় সম্পর্ক। এসব সম্পর্কের সূত্র ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৈদেশিক প্রভাব বিস্তারে তিনি ভূমিকা রাখেন, সেটা সরকারি দলের কথায় যেমন প্রতিধ্বনিত তদ্রুপ বিএনপিও তাকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বহুদিন ধরে । তিনি নীরব আছেন মাতৃভূমি ইস্যুতে, তেমনটি ভাবার সুযোগ নাই। নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে এসে সবচেয়ে তৎপর দেখা যাচ্ছে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে। এই তৎপরতার কৌশল নির্ধারণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বড় ভূমিকা আছে এবং ড. কামাল হোসেনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে মনে করেন রাজনৈক বিশ্লেষক ও উৎসুক জনতা।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
3

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *