মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াতের ভবিষ্যত কর্মপন্থা কি ?
জামায়াত স্বনামে আর নির্বাচন করবেনা…
রাজনীতির মাঠ থেকে সরে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘ ১০ বছরে চরম প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিবেশে টিকে থাকার লড়াইয়ে জামায়াত এখন ক্লান্ত। দলটি বিএনপি’র নেতৃত্বে জোটে আছে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। অনেক ত্যাগ ও বিসর্জনের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখা সে জোট থেকেও চূড়ান্তভাবে বেরিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ও স্বতন্ত্রভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও দু তিনটি নির্বাচনী এলাকা ছাড়া মাঠে জামায়াত ছিল নিষ্ক্রিয়। তবে এর পেছনে ব্যাপক ধর-পাকড়-গুম, দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিকভাবে কর্মসূচি পালন করতে না পারা, সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করেছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার আরো শক্তি সঞ্চয় করার পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত নতুন কর্মকৌশলে এগুচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
নির্বাচনের পর দু একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক ছাড়া জামায়াত কোন কর্মসূচি হাতে নেয়নি। তবে এরই মধ্যে দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ২০১৯ সালের জন্য তাদের নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করেছে। জামায়াতের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের নামে ভবিষ্যতে আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা। এছাড়া এ মুহূর্তে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দলটির অধিকাংশ নেতা-কর্মীর অনিচ্ছুক । সূত্রটি আরো জানায়, অল্প দিনের মধ্যেই জামায়াতে ইসলামী বিএনপির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট থেকে বেরিয়ে যাবে। জানা গেছে, জামায়াত বিএনপির কাছে দাবি জানাবে, ২০ দলীয় জোট ভেঙ্গে দিতে অথবা তা না দিলেও জামায়াত যে জোটে থাকছেনা, সে ঘোষণা বিএনপির পক্ষ থেকে দিতে।
তাহলে জামায়াত এখন কি করবে?
সে প্রশ্নের সূত্র ধরে জানা যায়, জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি এখন সমাজ বিনির্মাণে মনোযোগ দেবে। তারা ইতোমধ্যে ৩০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তারা আপাতত রাজনীতির মাঠ থেকে নিজেদেরকে পুরোপুরি গুটিয়ে নেবে এবং আগামী ৩০ বছর শুধু সামাজিক কাজ ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে তৎপর থাকবে।
কি আছে জামায়াতের এই দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় ?
তথ্য মতে, তারা প্রশাসনে, সেনাবাহিনীতে এবং জাতীয় পর্যায়ে দক্ষ জনবল সৃষ্টি করবে। উল্লেখ্য, জামায়াতের তরুণ প্রজন্ম অনেক দিন ধরে দলটির স্বাভাবিক কোন কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেনা। এছাড়া জামায়াত পরিচয়ে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তেও ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের । ফলে কৌশলগতভাবে তারা এখন বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষ জনবল তৈরীতে মনোযোগী হবে। ভেতরে ভেতরে জামায়াতের বড় একটি অংশ দলের সংস্কারের পক্ষে। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপটে দলটির তরুণ প্রজন্ম চায়, তুরস্কের একে পার্টির আদলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে । জামায়াতের পুরনো ধাঁচের নেতৃত্বও এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবছে যে, এভাবে আর টিকে থাকা যাবেনা।
জামায়াত সমর্থক এক বুদ্ধিজীবী চেঞ্জ টিভি ডট প্রেসকে জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বহুবার সংকটে পড়লেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়ে এবং নানা বাধা বিপত্তির মুখে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর মত শক্তি, অর্থ ও জনবল সংকটে পড়েছে । প্রশিক্ষিত জনশক্তি যা আছে, তারাও আর গতানুগতিক রাজনৈতিক কর্মসূচীতে সাড়া দিতে চাচ্ছেনা । তবে, জানা গেছে; জামায়াত এই সময়ে প্রশাসন, গণমাধ্যম, বিচারাঙ্গণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নানা সেক্টরে নিজেদের আদর্শিক লোক তৈরীকে প্রধান কর্মসূচি হিসেবে চিহ্নিত করে জোরালোভাবে কাজ শুরু করবে। সেক্ষেত্রে যেসব আওয়ামী পরিবারে জামায়াতের সদস্য রয়েছেন, তাদের ক্যারিয়ার গঠনকে টার্গেট করে সামনে এগুচ্ছে দলটি, বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জামায়াত নেতা।
মাশা আল্লাহ।
খুব ভালো উদ্যেগ।
মঙ্গলের মালিক আল্লাহ।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ