নির্বাচনে সবচেয়ে লাভবান গণফোরাম
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথম কোন নির্বাচনে গণফোরাম ব্যাপক জয় পেয়েছে। অতীতের নির্বাচনে গণফোরাম কখনই পার্লামেন্টে যেতে পারে নাই। যদিও এ দলটির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন এবং সাংসদ ও মন্ত্রী ছিলেন।
গণফোরাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে দল হিসেবে এবারই প্রথম ব্যাপক লাইম লাইটে আসে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক হিসেবে নির্বাচনে বিজয়ী হয় দু’টি আসনে। গণফোরামের দুই বিজয়ী নেতা হলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান। নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি সিদ্ধান্ত নিল, তাদের যে পাঁচজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে তারা শপথ নেবেন না। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী ড. কামাল হোসেন জানালেন, রাজনৈতিক দল গণফোরামের দুই বিজয়ী নেতা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান প্রকৃত অর্থে নির্বাচিত হয়েছেন; এজন্য তাদের শপথ নেয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গণফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯২ সালে এবং নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়েছে ২০০৮ সালে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম ঐক্যফ্রন্টের শরিক হিসেবে অংশ নেয় ৭টি আসনে। ৩০০ আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস জয় হয়েছে। আর ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি পেয়েছে মাত্র ৫টি আসন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হিসেবে ঐক্যফ্রন্ট থেকে জামায়াত কোন আসনেই জিততে পারেনি। যদিও অংশগ্রহণমূল প্রায় সব সংসদেই জামায়াতের একটি হলেও নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিল। এবারের নির্বাচনে গণফোরামের দুই আসন পাওয়া একটি বড় বিজয় দলটির জন্য। সংসদে যাবে কি যাবেনা সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু দল হিসেবে তারা জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক অবস্থানে যেতে সক্ষম হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চেঞ্জ টিভির পক্ষ থেকে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর নিকট তার মূল্যায়ন জানতে চাইলেন তিনি বলেন, “ বিষয়টা হলো আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছি, যার বড় শরিক হলো বিএনপি। দলগত সিদ্ধান্ত ছিল ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করার। কিন্তু আমাদের দল থেকে যে দু’জন জিতেছেন তার একজন মোকাব্বির খান। তিনি তো ধানের শীষ পাননি। তাহসিনা রুশদীর লুনাকে দেয়া হয়েছিল ধানের শীষ। নির্বাচনের আগে তাঁর প্রার্থিতা আদালতে স্থগিত হয় এবং তখন আর প্রতীক দেয়ার সুযোগ ছিলোনা। যে কারণে মোকাব্বির খান আমাদের দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়েই নির্বাচন করেছেন। অবশেষে যদিও তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীই ছিলেন।”
সুব্রত চৌধুরী আরো বলেন, “দল হিসেবে গণফোরাম তো এতটা ভোট এককভাবে পাবেনা। জনগন ভোট দিয়েছে বিএনপির শরিক হবার কারণে। আসলে ভোট তো দুই প্রতীকের মধ্যেই হয়। এককভাবে গণফোরামের সম্ভব নয় বিজয়ী হওয়া। আর এ জেতাটা একটা এক্সিডেন্টাল জেতা!”
ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকবে। যে লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে সে লক্ষ্য এখনো অর্জন হয় নাই। সুতরাং দীর্ঘ মেয়াদে একসাথে থাকবে ঐক্যফ্রন্ট।”