fbpx
হোম রাজনীতি সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

0

মঙ্গলবার (২ মে) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সোমবার (১ মে) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, এ কুখ্যাত আইন বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায়, যা গণতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সরকার এ আইনের সুযোগ নিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মী, সংবাদকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা আট মাসের বেশি সময় কারাগারে আটক এবং ইউএনবির সাংবাদিক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একই আইনে মামলার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, অবিলম্বে কারাগারে আটক শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাসহ আটক সব বন্দির মুক্তি এবং এ আইনের অধীনে সব মামলা প্রত্যাহার ও গণতন্ত্রবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানানো হয় বৈঠকে।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বিলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বিলটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ‘অত্যাবশ্যক পরিসেবা বিল ২০২৩’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে সংসদে পেশ করা হয়েছে। শিগগির তা আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রস্তাবিত এ আইন নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, এক তরফা, নিবর্তনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আইনটি প্রণয়নের কোনো পর্যায়েই অংশীজনের মতামত নেওয়া হয়নি। প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যে কোনো শিল্প, প্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এ আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে। এ আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগযুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিল তা এ আইন দিয়ে নাকচ করে দেওয়া হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রচলিত শ্রম আইনেই কোনো ধর্মঘট জনজীবন কিংবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করলে তা নিষিদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিরোধটি শ্রম আদালতে পাঠানোর কথা বলা আছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার প্রয়োজন মনে করলেই লক্ষ-কোটি শ্রমজীবী, পেশাজীবী মানুষকে ৬ মাস ৬ মাস করে সারাজীবন ধর্মঘট নিষিদ্ধ ঘোষণার আওতায় রাখতে পারবে। কিন্তু তাদের ন্যায্য সমস্যা সমাধান কিংবা প্রাপ্য আদায়ের কোনো বিকল্পের কথা আইনে রাখা হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও কনভেনশন নং ৮৭ অনুসমর্থন করেছে। যেখানে ধর্মঘটের অধিকারকে সংগঠিত হওয়ার অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ কনভেনশনে স্বাধীনভাবে সংগঠিত হওয়ার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে দেশের বিপুল শিল্প, প্রতিষ্ঠান ও সেবা খাতকে ‘অত্যাবশ্যক পরিসেবা’ চিহ্নিত করে শ্রমজীবী মানুষের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো তাদের সংগঠিত হওয়ার অধিকারও কেড়ে নেওয়া।
‘একই বছর বাংলাদেশ আইএলও কনভেনশন নং ৯৮ অনুসমর্থন করেছে। এ কনভেনশনে স্বাধীনভাবে যৌথ দরকষাকষির অধিকার নিশ্চিয়তা দিয়েছে। সবাই জানে, ধর্মঘটের অধিকার হলো যৌথ দরকষাকষির প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। অত্যাবশ্যক পরিসেবা বিলে ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অর্থ হলো- যৌথ দরকষাকষির অধিকারও কেড়ে নেওয়া। এটাও সরকারের আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ এবং শ্রমিক সংগঠন ও আন্দোলনকে অকার্যকর করে মালিকদের নির্যাতন, বঞ্চনা ও শোষণ সুরক্ষার হাতিয়ার।’
ফখরুল বলেন, আইএলও’র সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ওই প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র মানতে বাধ্য। যেখানে বলা হয়েছে, কোনো সদস্য রাষ্ট্র কোনো কনভেনশন অনুসমর্থন করলে তার প্রতিটি বিধান বাস্তবায়ন করবে। রাষ্টের প্রচলিত আইন কনভেনশনের কোনো বিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ হলে সেই আইন পরিবর্তন করতে হবে। অথচ প্রস্তাবিত আইনে অনুসমর্থনকৃত কনভেনশনের বিধান অগ্রাহ্য করে সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘ্ন করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি মনে করে প্রস্তাবিত আইনটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুণ্ন করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং জনগণের সংবিধান সম্মত প্রতিবাদের অধিকার পরিপন্থি। বিএনপি প্রস্তাবিত ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

 

 

 

 

 

সূত্র : জাগো নিউজ
Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *