fbpx
হোম বিনোদন সঙ্গীত পরিচালনায় একনিষ্ঠ শিল্পী রফিকুল আজিজ টিটো
সঙ্গীত পরিচালনায় একনিষ্ঠ শিল্পী রফিকুল আজিজ টিটো

সঙ্গীত পরিচালনায় একনিষ্ঠ শিল্পী রফিকুল আজিজ টিটো

0

 মামুন-উর-রশীদ:

খুব ছোট বেলা থেকেই সঙ্গীতের সাথে পরিচয় টিটোর। বাবা সঙ্গীতগুরু আব্দুল আজিজ বাচ্চুর কাছে গান শিখতে আসতেন অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীরা। বাবা যখন গানের তালিম দিতেন তখন টিটো পাশে আড়াল থেকেই সেই সুর মনে মনে তুলতে থাকেন। গুণ গুণ করে সেই গান গাইতে থাকেন সময় পেলেই।

টিটোর পুরো নাম রফিকুল আজিজ টিটো। বন্ধু মহলে টিটো নামেই পরিচিত। শুরুতে বন্ধুদের মাঝে, কলেজে এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। কিন্তু একদিন হঠাৎই ডাক আসে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। ইতিমধ্যেই টিটো, টুটুল, জয় মিলে প্রতিষ্ঠা করেন পানকৌড়ি নামে একটি ব্যান্ড দল। এই ব্যান্ড দল নিয়েই পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মাতিয়ে আসেন। তাদের এতটাই জনপ্রিয়তা ছিল যে, টিটোর কথা, সুর ও গাওয়া “অপেক্ষায় আর একদিন” খুব হিট হয়। এরপর ৯০ দশকে সঙ্গীতার ব্যানারে ‘পল্লবী’ এ্যালবাম টিটোর পানকৌড়িকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে দেয়।

প্রশ্ন ছিল, আড়াল থেকে বাবার ক্লাশ কেন শুনতেন? টিটোর উত্তর-বাবা আসলে পছন্দ করতেন পরিবারের ছেলে-মেয়েরা পড়া-লেখা করে প্রতিষ্ঠিত হোক। সঙ্গীত শিল্পী বা সঙ্গীত পেশায় যেন কেউ না আসে এটা তিনি খুব শক্তভাবেই চাইতেন। বাবার শেখানো রাগগুলো আমাকে পাগল করে দিত। গলার সুক্ষ কাজগুলো সারাদিন প্রাক্টিস করতাম। প্রতিদিন চর্চা করতে করতে আর ছাড়া হলো না। কিন্তু আমি এতো কিছুর পরও কেমন যেন একটা শূণ্যতা অনুভব করতে থাকি। কি যেন হচ্ছে না, কি যেন করছি না বা আরও কিছু বিশেষ কাজ করা দরকার।

গান করছি, ছাত্র-ছাত্রীদের তখন আমিও গান শেখাচ্ছি এবং সুরও করছি। আমার সুরে তখন স্থানীয় শিল্পীরা গান করছেন। টিটো বলে চললেন তার সঙ্গীত পরিচালনার কথা। বললেন দেশের বহু জনপ্রিয় ও বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, বাংলাদেশ বেতার, বান্দরবান কেন্দ্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে তার চাকরী বা কর্মময় জীবন শুরু। তারপর ঢাকায় বদলী হয়ে আসেন। এন্ড্রু কিশোর, রফিকুল আলম, সুবীর নন্দী, রিজিয়া পারভীন, এম.এ খালেক, আলম আরা মিনু, সামিনা চৌধুরী-টিটোর সুরে গান করেছেন। এ প্রজন্মের শিল্পীদের মাঝে মুহিন, সাব্বির, রাজীব, নিশিতা, পুলক অধিকারী, এম.এ মোমিন গান করেছেন। ঢাকার চলচ্চিত্রেও টিটোর গান রয়েছে। করেছেন নাটকের গান, থিম সং। মাঝে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষকতা করেছেন টিটো। এখনকার শিল্পীদের সম্পর্কে টিটোর অভিমত জানতে চেয়েছিলাম।

টিটো বললেন-এরা অনেক সচেতন। প্রযুক্তির সাথে এদের চলতে হয়। অনেক বোঝে। গানও করছে ভাল। দেশ-বিদেশে অনুষ্ঠান করছে। অসংখ্য চ্যানেলে নবীন এসব শিল্পীরা অংশ নিচ্ছে। অভিজ্ঞতাও বাড়ছে। তবে কেউ কেউ এসে-নাম ডাকের পেছনে দৌঁড়ানোর কারণে নিয়মিত চর্চা করা হয়ে উঠছে না তাদের। নিয়মিত চর্চা না করতে পারলে হয়তো এসব শিল্পীদের আমরা ধরে রাখতে পারবো না। আমি চাইনা ওরা হারিয়ে যাক। ওদের মাঝে আমিও বেঁচে থাকবো শ্রোতা-দর্শকের হৃদয়ে।

টিটোর প্রত্যাশা-কর্মঠ শিল্পী হবেন। সঙ্গীত পরিচালনা করবেন আজীবন। বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতে যেন সম্মান নিয়ে ভাল কাজ করে রেখে যেতে পারেন। বাংলাদেশ বেতারের পুকুর পাড়ে বসে কথা বলতে বলতে বিকেল হয়ে গেল। টিটো তার বাইসাইকেল নিয়ে দাঁড়ালেন। আমিও তার পাশাপাশি ধীরে ধীরে বেতার ভবন থেকে বেরিয়ে এলাম। মনে মনে বললাম-টিটোর গান ইথারে ইথারে ভেসে থাকুক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে টিটোর সৃষ্টি আবহমান কাল স্থায়ী হোক।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
2

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *