যে দেশে এখনো করোনায় আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি
মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তানে এখন পর্যন্ত কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী ধরা পড়েনি বলে সেখানকার সরকারের দাবি। তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দেশটির সরকার সত্য গোপন করছে। এর ফলে মহামারি প্রতিরোধের চেষ্টায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এরি মধ্যে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে অন্যান্য দেশ যখন লকডাউন জারি করছে, তখন তুর্কমেনিস্তানে ৭ এপ্রিল ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ উদ্যাপনের জন্য সাইকেল র্যালির আয়োজন করা হয়।
মধ্য এশিয়ার এই দেশটি দাবি করছে, করোনার একটি ঘটনাও ধরা পড়েনি সেখানে। কিন্তু যে দেশটির এত কুখ্যাতি সেন্সরশিপের জন্য, সেই দেশের সরকারকে কতটা বিশ্বাস করা যায়? লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক মার্টিন ম্যাককি বলেন, ‘তুর্কমেনিস্তানের সরকার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেসব তথ্য প্রকাশ করে, সেগুলোর একেবারেই বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’
করোনা সংক্রমণ হয়তো এরই মধ্যে তুর্কমেনিস্তানে ঘটে গেছে, কিন্তু ভয়ে দেশটির কোনো মানুষ সেরকম ইঙ্গিত পর্যন্ত দিতে নারাজ। কারণ, তুর্কমেনিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়ক রাষ্ট্রগুলোর একটি।
ম্যাককি বলেন, আমার পরিচিত একজন, যিনি একটি সরকারি সংস্থায় কাজ করেন, তিনি বলেছেন, এই ভাইরাস এখানে আছে বা আমি শুনেছি ভাইরাসটি পাওয়া গেছে, এরকম কথা পর্যন্ত আমার বলা উচিত্ নয়; কারণ এতে আমার বিপদ হতে পারে।
রিপোর্টার উইদাউট বর্ডারের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এনপিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেউ প্রকাশ্যে করোনাভাইরাস শব্দটি উচ্চারণ করতে পারবে। কেউ করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। ২০০৬ সাল থেকে তুর্কমেনিস্তান শাসন করছে বার্দিমুখাবেদভের কর্তৃত্ববাদী সরকার।
এনপিআরের খবরে বলা হয়, দেশটিতে দমনপীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থা কায়েম থাকায় সেখানে সংবাদ মাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। গুটিকয়েক স্বতন্ত্র সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে রয়েছে ক্রনিকলস অব তুর্কমেনিস্তান নামে একটি ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটটিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সরকার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমকে করোনা ভাইরাস শব্দটি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল ও অফিসে বিতরণকৃত পুস্তিকা থেকেও শব্দটি সরানোর নির্দেশ দিয়েছে।