fbpx
হোম আন্তর্জাতিক সূর্যগ্রহণের সময় নবী সা. সাহাবীদের নিয়ে সালাত পড়তেন
সূর্যগ্রহণের সময় নবী সা. সাহাবীদের নিয়ে সালাত পড়তেন

সূর্যগ্রহণের সময় নবী সা. সাহাবীদের নিয়ে সালাত পড়তেন

0

 ২৬ ডিসেম্বর সারাবিশ্ব এমন এক সূর্যগ্রহণ দেখছে যা শেষবার পৃথিবীর মানুষ দেখেছিল ১৭২ বছর আগে। এ সূর্য গ্রহণের সময় সূর্যের চারপাশে থাকবে এক আগুনের বলয়। বিজ্ঞানীরা যাকে বলেন ‘রিং অব ফায়ার’। তাই এ সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ কেউ বিশেষ গ্লাস কিনে রাখছে।

আমাদের দেশের মানুষেরা অত্যন্ত আনন্দ আর কৌতুহল নিয়ে সূর্যগ্রহন এবং চন্দ্রগ্রহন প্রত্যক্ষ করে থাকে। অথচ বিষয়টি আনন্দের নয়, ভয় ও ক্ষমাপ্রার্থনার। সূর্য ও চন্দ্র যখন গ্রহণের সময় হয় তখন আমাদের নবীর সা. চেহারা ভয়ে বিবর্ণ হয়ে যেতো। তখন তিনি সাহাবীদের নিয়ে জামাতে সালাত পড়তেন। কান্নাকাটি করতেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হলো আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত একটি প্রক্রিয়া। চাঁদ যখন পরিভ্রমণ অবস্থায় কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে কিছু সময়ের জন্য সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই সূর্যগ্রহণ (Solar eclipse) বা কুসুফ। আর পৃথিবী যখন তার পরিভ্রমণ অবস্থায় চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখনই পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে চাঁদ কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই চন্দ্রগ্রহণ (Lunar eclipse) বা খুসুফ।

 

আরবীতে সূর্যগ্রহণকে ‘কুসূফ’ বলা হয়। আর সূর্যগ্রহণের নামাজকে ‘নামাজে কুসূফ’ বলা হয়। দশম হিজরীতে যখন পবিত্র মদীনায় সূর্যগ্রহণ হয়, রাসূল সা. ঘোষণা দিয়ে লোকদেরকে নামাজের জন্য সমবেত করেছিলেন। তারপর সম্ভবত তার জীবনের সর্বাধিক দীর্ঘ নামাজের জামাতের ইমামতি করেছিলেন।

অবিশ্বাসী বিজ্ঞানীরা প্রথমে যখন মহানবীর সা. এ আমল সম্পর্কে জানতে পারলো, তখন তারা এটা নিয়ে বিদ্রুপ করলো (নাউযুবিল্লাহ)। তারা বললো, এ সময় এটা করার কি যৌক্তিকতা আছে? সূর্যগ্রহণের সময় চন্দ্রটি পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে বলে সূর্যগ্রহণ হয়। ব্যাস এতটুকুই,  এখানে কান্নাকাটি করার কি আছে?

 

মজার বিষয় হল,বিংশ শতাব্দীতে যখন এ বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু হলো, তখন মহানবীর সা. এই আমলের তাৎপর্য বেরিয়ে আসলো।

বিজ্ঞানীরা বলেন, সূর্য অথবা চন্দ্রগ্রহণের সময় ঝুলন্ত পাথরগুলো পৃথিবীতে ছুটে এসে আঘাত হানার আশংকা বেশী থাকে। কারণ হচ্ছে,এসময় সূর্য,চন্দ্র ও পৃথিবী একই সমান্তরালে,একই অক্ষ বরাবর থাকে ।ফলে তিনটির মধ্যাকর্ষণ শক্তি একত্রিত হয়ে ত্রিশক্তিতে রুপান্তরিত হয়। এমনি মুহূর্তে যদি কোন পাথর বেল্ট থেকে নিক্ষিপ্ত হয় তখন এই ত্রিশক্তির আকর্ষণের ফলে সেই পাথর প্রচন্ড শক্তিতে, প্রবল বেগে পৃথিবীর দিকে আসবে,এ প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আসা পাথরটিকে প্রতিহত করা তখন পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাড়াবে।

ফলে পৃথিবীর একমাত্র পরিণতি হবে ধ্বংস। একজন বিবেকবান মানুষ যদি মহাশূন্যের এ তত্ব জানে, তাহলে তার শঙ্কিত হবারই কথা। এই দৃষ্টিকোন থেকে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় মহানবীর সা. সেজদারত হওয়া এবং সৃষ্টিকূলের জন্য পানাহ চাওয়ার মধ্যে আমরা একটি নিখুঁত বাস্তবতার সম্পর্ক খুঁজে পাই। মহানবীর সা. এ আমলটি ছিলো যুক্তিসঙ্গত ও বিজ্ঞানসম্মত। তাই এটিকে উৎসব না বানিয়ে আল্লাহকে ভয় করুন। সালাত আদায় করুন।

ঢাকায় সূর্যগ্রহণটি বাংলাদেশ সময় (বিএসটি) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে বেলা ২টা ৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে শেষ হবে। সকাল ৯টা ১মিনিট ১৬ সেকেন্ডে। ওই সময়ই সূর্য সবচেয়ে বেশি ঢাকা পড়বে চাঁদের আড়ালে এবং সূর্যকে একটি অগ্নিবলয়ের মতো দেখাবে। তাই এ সময় সালাতে দাড়িয়ে যান। অন্যদেরও বলুন দোয়ায় নিমগ্ন হতে যাতে এর ফলে মানুষের কোন ক্ষতি না হয়।

 

আর চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের কোনো প্রভাব সৃষ্টির ওপর পড়ে না। আমাদের সমাজে প্রচলিত বিশ্বাসগুলো নিছকই কুসংস্কার।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *