fbpx
হোম জাতীয় বিএনপির ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবার কৌশল…

বিএনপির ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবার কৌশল…

0

১৬ কোটি মানুষের দৃষ্টি এখন স্থির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। পুরো দেশ এখন কাঁপছে ভোট হিমাঙ্কে। আর উত্তাপ নিচ্ছে পছন্দের নেতাদের বক্তব্য, বিবৃতি ও আশাব্যঞ্জক কথা থেকে। জয় পরাজয়ের ভয় তাড়া করছে উভয় জোটকেই। প্রকাশ্য সাহসের ঢাকঢোলের পেছনে আতঙ্ক হিম ছড়াচ্ছে।

বিএনপি আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবেনা-সে কথা বলে আসছে আগ থেকেই। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ‘মেসি-নেইমার গোল মিস করলেও শেখ হাসিনা গোল মিস করবেন না’ টাইপের বক্তব্য। তবে আওয়ামী দুর্গে বিএনপির ভোট কেন্দ্র পাহারা নিয়ে সমালোচনা চলছেই। এলোমেলোভাবে, কখনো বক্তব্যে আবার কখনো সোস্যাল মিডিয়ায় বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবার কথা বলছে প্রচারণার শুরু থেকে।

বিএনপি বলছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ তাদের আন্দোলনের অংশ। তাই তারা সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদেরকে বার্তা দিয়েছে, ফজরের নামাজের পরপরই ভোট কেন্দ্রে যেতে এবং ভোট দিতে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিএনপি জোটের নেতাদের মুখে সকাল-সকাল ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার যে আহবান করা হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে বিএনপির সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বার্তা দিচ্ছে কিভাবে তারা ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবে।

এছাড়া, মাঠের বাইরে ভার্চ্যুয়াল জগতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন চরমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গণসংযোগ এবং বাকযুদ্ধ করছেন উভয় জোটের কর্মী-সমর্থকেরা। সোশ্যাল মিডিয়া বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ভার্চুয়াল জগতে ছড়িয়ে পড়েছে কেন্দ্র পাহারার নির্দেশনা।

কোন কোন পোস্টে বলা হচ্ছে, ‘‘ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে সিটিজেন সাংবাদিকতার কথা। যেকোন নাগরিকের তোলা একটি ছবি এই ভোট  ডাকাতদের নগ্ন চেহারা উন্মোচিত করতে পারে । সেজন্য সারাক্ষণ ক্যামেরা রেডি রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনে এমবি ও পর্যাপ্ত ব্যালেন্স মজুদ রাখতেও বলা হচ্ছে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথা বলা হচ্ছে। গুজবে কান না দিয়ে সত্য খবরটি জেনে সবাইকে তা জানিয়ে দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হচ্ছে। ’’

হঠাৎ ফেসবুক বন্ধ হলে করণীয়  সম্পর্কে দেয়া হচ্ছে বিশেষ বিশেষ নির্দেশনা। VPN ইনস্টল করা, হোয়াটসআপ, ইমুতে গ্রুপ খুলে নির্বাচনী তথ্য আদান প্রদান করার নির্দেশনাও এখন বিএনপির সক্রিয় কর্মীদের হাতে হাতে।

কেন্দ্র পাহারার বিষয়ে নেতাদের নির্দেশনার পাশাপাশি অনেকে স্ব-প্রণোদিত হয়ে বা অদৃশ্য ইঙ্গিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভোটের দিন সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে হাজির হবে,  একসাথে ১০-১৫ জন বা তার বেশি ভোট দিতে যাবে, প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে যাবে, ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম বা জালিয়াতি হলে পুলিশের অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে প্রতিহত করবে,  অনিয়ম হলে তার বিরুদ্ধে জনস্রোত সৃষ্টি করবে,  ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ কেন্দ্র ছাড়বে না এবং  দরকার হলে প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ও পানি সঙ্গে  রাখবে।

বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মাঝে এ ধারণাও জন্মেছে, বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বেপরোয়াভাবে গুলি চালানো পুলিশের পক্ষে সম্ভব না। সারাবিশ্ব  নজর রাখছে ।  জনগণ প্রতিরোধ সৃষ্টি করলে এরা সব গুটিয়ে  যাবে।

বিদেশ থেকে পরিচালিত একটি ভাইবার গ্রুপে বলা হয়েছে, ভয়ের আশংকা থাকলে আত্মরক্ষার জন্য সাথে একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে যাবার জন্য। আর আমাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ভোট কেন্দ্র পাহারা দেবার জন্য বাঁশের লাঠির প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী জোটের কর্মী-সমর্থকরা। লন্ডনে অবস্থানরত একজন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী পরামর্শ দিয়েছেন, ভোটের আগে সকল সেনা টহলকে শিশুদের সাথে নিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা দেয়ার জন্য।

ইতোমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষ জেগে উঠেছে। তারা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জনগণের শক্তি দিয়ে সবকিছুকেই পরাজিত করা যায়। ২৭ ডিসেম্বর সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের জয়ের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত মনে করি, আমরাই জয়লাভ করব। কঠিন প্রতিকূলতার মধ্যে আমরা মনে করি জনগণই হলো সব ক্ষমতার উৎস। জনগণ তাদের শক্তি ৩০ ডিসেম্বর প্রয়োগ করবে।’

আর একই দিনে সংবাদপত্রে এসেছে, আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা আবার আসছি, মানুষ আমাদেরকে চাইছে।’

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকার বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ভোট কেন্দ্র পাহারার বিপরীতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের  ১৬ ডিসেম্বর নোয়াখালীতে বলেছেন,ওরা নাকি ভোট পাহারা দেবে, আমাদের ভোট রক্ষা করার লোকও আছে। ওরা যদি আসতে পারে একদিনে সারাদেশে রক্তের বন্যা বইয়ে দেবে, লাশের পাহাড় সৃষ্টি করবে।

এসব প্রচার প্রচারণার মধ্যেও জনগণ সেনাবাহিনীর মাঠে থাকাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে এবং নির্বিঘ্ন ভোট প্রত্যাশা করছে।

 

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
9

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *