বাংলাদেশে আটকে পড়া ৬১ ট্রাক চালককে ফেরত নিচ্ছে না ভারত !
ভারতের ৬১ জন ট্রাক চালককে গত ১৫ দিনেও ফিরিয়ে নেয়নি সে দেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ।
লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে পণ্য খালাস করে দেশে ফেরার কথা ছিল তাদের। ওইসব ট্রাকচালক এখন অনেকটাই ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বুড়িমারী স্থলবন্দরে।
জানা যায়, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানিয়েছেন। ঢাকা জানিয়েছে দিল্লিকে। আর দিল্লি জানিয়েছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য চ্যাংরাবান্ধায় আনা হয়েছিল পাটবীজগুলো।
সে দেশে লকডাউন ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা আমাদানি-রফতানি বন্ধ রাখায় সেগুলো ১৫ দিন সেখানেই আটকে ছিল। পরে উভয় দেশের সরকারি নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গত ৪ এপ্রিল পাটবীজ নিয়ে ৬১টি ভারতীয় ট্রাককে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। কথা ছিল বীজ নামিয়ে ওইদিনই তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ওইদিনই ট্রাক খালি করে সেগুলো ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা নেই বলে তাতে বাঁধ সাধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই দিন থেকেই ট্রাকচালকরা আটকে আছেন বুড়িমারীতে।
আসামের ট্রাকচালক রাজেশ বলেন, এখনও ভারত থেকে ফিরছেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু আমরা ভারতীয় হয়েও নিজের দেশে ফিরতে পারছি না। এটার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কোনো দোষ নেই। ভারতের সরকারই আমাদের দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে না। মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা এলাকার ট্রাকচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পাটবীজ নিয়ে পাঠালো, কিন্তু আমাদের আর ফিরিয়ে নিচ্ছে না। আমাদের যদি ফিরিয়ে না নেবে তাহলে তারা কেন এ দেশে পাঠালো ?
যোগাযোগ করা হলে ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার বলেন, আমরা বারবার তাগাদা দেয়ার পরও করোনা ভাইরাসের কথা বলে ট্রাক ও চালকদের ফিরিয়ে আনছে না ভারত।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (এসি) সোমেন কুমার চাকমা বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এ বিষয়ে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ভারতীয় ট্রাকচালকরা আটকে পড়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি।