fbpx
হোম অনুসন্ধান অপরাধবার্তা নৌকার মাঝি যখন কোটিপতি !
নৌকার মাঝি যখন কোটিপতি !

নৌকার মাঝি যখন কোটিপতি !

0

২০১৫ সালে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার পর ইয়াবা ব্যবসায়ী জাফরের ইয়াবা সাম্রাজ্য ধরে রেখেছিলেন নুরুল আবছার। তখন থেকেই ফুলে ফেঁপে ওঠেন। রাতারাতি টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেন আওয়ামী লীগের পদও। হয়ে যান আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য।

পতেঙ্গা দক্ষিণ পাড়ার নুরুল আবছার ২০০০ সালের দিকে ছিলেন নৌকার মাঝি। ভাগ্যক্রমে জাফরের সঙ্গে পরিচয়ে বদলে যায় আবছারের জীবন।

২০১৮ সালে পতেঙ্গা থানা পুলিশ ৪০ বোতল বিদেশি মদসহ নুরুল আবছারকে হাতেনাতে ধরলেও পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুলিশ সদস্যদের হয়রানি করতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে সেই মামলা তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

দুদকের তদন্তে নুরুল আবছারের মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। দুদকের প্রতিবেদনে নুরুল আবছারের মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরে মিথ্যা অভিযোগ করায় নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে দুদক বাদি হয়ে মামলা দায়ের করে।

নুরুল আবছারের ভাই শাহেনুর। ২০১৭ সালের ৪ জুন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নুরুল আবছার ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (৭৬/১৭) করেন শাহেনুর।

সাধারণ ডায়েরিতে নুরুল আবছারের ভাই শাহেনুর উল্লেখ করেন, নুরুল আবছার দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছিলেন। তার কোনো বৈধ ব্যবসা না থাকলেও রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান। মূলত ইয়াবার টাকায় সম্পদশালী হয়ে ওঠেন নুরুল আবছার।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ জুন পতেঙ্গা নেভাল রোডের চাইনিজ ঘাটের সামনে থেকে একটি বস্তাসহ নুরুল আবছারকে গ্রেফতার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। বস্তায় ৪০ বোতল বিদেশি মদ পাওয়া যায়। পরে এ ঘটনায় পুলিশ নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলাটি বর্তমানে যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পুলিশ ৬০০ পিস ইয়াবাসহ আদিল খান নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। সেই মামলার এজাহারে নাম রয়েছে নুরুল আবছারের। আদিল খান নুরুল আবছারের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে রাজু নামে আরেকজনের কাছে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছিল বলে তখন পুলিশকে জানায়।

নুরুল আবছার বছর তিনেক আগে পতেঙ্গা দক্ষিণ পাড়ায় তৈরি করেন দোতলা বাড়ি। বাড়ির চারপাশে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। তার বাড়িতে যাওয়ার পথের মুখেও বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, যাতে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গেলে আগে থেকে জানতে পারেন।

পুলিশের তালিকায় থাকা মাদক ব্যবসায়ী নুরুল আবছার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও কিনেছিলেন। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কৃত নুরুল আবছারকে দলীয় সমর্থন দেয়নি আওয়ামী লীগ। দলীয় সমর্থন না পেলেও নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নুরুল আবছার। প্রতীক বরাদ্দও পেয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নুরুল আবছার নিজেকে স্বশিক্ষিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া আয় হিসেবে দেখিয়েছেন ব্যবসা। তার বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। তার হাতে নগদ টাকার পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১ লাখ টাকা। তার মালিকানাধীন দুইটি মোটরসাইকেল রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।

কিন্তু নুরুল আবছারের প্রাইভেট কার থাকলেও তা হলফনামায় দেখানো হয়নি। এছাড়া নামে-বেনামে তার সম্পদ রয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

পতেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মো. ইলিয়াছ বলেন, নৌকার মাঝি হিসেবে কাজ করতেন নুরুল আবছার। ইয়াবা ব্যবসায়ী জাফরের সঙ্গে মিলে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছেন। পতেঙ্গা এলাকার মাদকের গডফাদার হলেও তাকে ধরার সাহস করছে না কেউ। এলাকার লোকজন কেউ প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *