তাঁবুর নিচ থেকে রাম এবার ভব্য মন্দিরে : মোদি
‘বৈচিত্র্যময় ভারতকে এক সূত্রে গেঁথেছেন রামচন্দ্র। বিবিধের মাঝে তিনিই মিলনের প্রতীক। দেশের মতো বিদেশেও আজ তাই রামের নামে জয়ধ্বনি শোনা যায়’- অযোধ্যার রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে এমনটাই বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বুধবার (৫ আগস্ট) ভারতের অযোধ্যায় ভূমি পূজার মধ্য দিয়ে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘এতগুলো বছর ভগবান রাম তাঁবুর নিচে বসবাস করছিলেন। এবার তাঁর স্থান হবে ভব্য মন্দিরে।’
পূজার্চনার পর মোদি বলেন, ‘এই মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য বহু মানুষ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁদের বলিদান আজ সার্থকতার রূপ নিতে চলেছে। আজকের দিনটি ত্যাগ, সংঘর্ষ ও সংকল্পের প্রতীক হয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশ আজ রামময়। সর্বত্র রামনাম ধ্বনি। এই মন্দির হবে ভারতীয় সংস্কৃতির আধুনিকতম প্রতীক। রাষ্ট্রীয় ভাবনার প্রতিফলন ঘটবে এর মধ্য দিয়ে। সারা পৃথিবীর মানুষ আসবেন এই মিলনস্থলে। এই মন্দিরের মাধ্যমে অতীতের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যতের মেলবন্ধন ঘটবে।’
তবে রাম মন্দিরের ভূমি পূজার দিন উপেক্ষিত রয়ে গেলেন রাম জন্মভূমি আন্দোলনের জনক বিজেপির নবতিপর নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি। তাঁর আন্দোলনে ভর দিয়েই লোকসভায় বিজেপি ২টি আসন থেকে ৮৯ ও পরবর্তীতে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করে। আদভানির সঙ্গী ছিলেন মুরলী মনোহর যোশি। ভূমি পূজায় তাঁরা আমন্ত্রিত ছিলেন না।
উল্লেখ্য, মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি করেন, যা পরবর্তীতে বাবরি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ মসজিদ তৈরির বিতর্কের সেই শুরু। দাবি ও পাল্টা দাবি নিয়ে রেষারেষিরও শুরু তখন থেকেই। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত কাঠামোয় রামলালার মূর্তি দেখা যায়। স্থানীয় ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের দাবি, রামলালা আবির্ভূত হয়েছেন। শুরু হয় রামলালার পূজা করার দাবি এবং তা নিয়ে আদালতের লড়াই। ১৯৮৬ সালে ফৈজাবাদ জেলা আদালতের নির্দেশে খুলে দেওয়া হয় রামলালার অস্থায়ী মন্দিরের তালা। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের হামলায় ধূলিসাৎ হয় বাবরি মসজিদ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে টানা শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে বিতর্কিত জমির মালিকানার রায় মন্দিরের পক্ষে দেন। অবসরের পর রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভার সদস্য করা হয়।