টাকা ব্যাংকে না জমিয়ে সবাই নিজের কাছেই রাখছে
করোনা আতঙ্কে বন্ধ রয়েছে দেশের বিভিন্ন কল-কারখানা, অফিস-আদালত কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চাকরি হারিয়ে বেকার হচ্ছেন অনেকেই। কারও আবার চাকরি আছে কিন্তু বেতন পাচ্ছেন না নিয়মিত। এমন পরিস্থিতিতে টাকা ব্যাংকে না জমিয়ে তুলে ফেলছে মানুষ। কেউ আবার করোনাকালীন সময়টা নিশ্চিন্তে নিশ্চিন্তে পাড়ি দেওয়ার জন্য টাকা রাখছেন নিজের কাছেই। এসব কারণে গত ৬ মাসে ব্যাংকবহির্ভূত জনগণের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হয়ে গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছে, করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা, আর্থিক সংকট, আমানতের সুদহার কম হওয়ায় মানুষের সঞ্চয় কমে গেছে। আবার যাদের অর্থ আছে তারাও নিজের হাতে টাকা রাখতেই পছন্দ করছেন। তবে এটা অর্থনীতির জন্য খুব ভালো নয়। ব্যাংকে টাকা না রাখলে আমানত কমে যায়। এতে করে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেয়ার সক্ষমতা কমে যায়। ফলে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। কর্মসংস্থান কমে যায়। পাশাপাশি অর্থের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জুন পর্যন্ত ব্যাংকবহির্ভূত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। যা আগের বছর একই সময় ছিল এক লাখ ৫৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ব্যাংকবহির্ভূত টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৩৮ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর মধ্যে দেশে মহামারি করোনা প্রার্দুভাবের সময়ে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন এ তিন মাসেই বেড়েছে ১৯ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা।
এদিকে করোনার অর্থ সংকটে মানুষ ব্যাংকগুলোতে আমানত আগের চেয়ে কম রাখছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে চলতি বছরের জুন শেষে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। কিন্তু গত ডিসেম্বরে ও এই প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ১২ শতাংশের উপরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৮১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৬ কোটি। সেই হিসেবে আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ।