জাতীয় পার্টিই দেশ জনগণের কল্যাণে কাজ করে: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক দল হিসাবে কেবল জাতীয় পার্টিই দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে। অন্যসব রাজনৈতিক দলের নেতারা উন্নয়নের নামে ব্যক্তিগত, দলগতভাবে অর্থ লুটপাট করেন। তারা বিদেশে টাকা পাচার করছেন। চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বিজয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হলেও এখনো বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে উঠেনি। রাজধানীর জুরাইনে বিজয় সমাবেশ ও পতাকা মিছিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি শনিবার সকালে এ কথা বলেন। শ্যামপুর-কদমতলী থানা জাতীয় পার্টির উদ্যোগে এ সমাবেশ ও বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা।
সমাবেশে জিএম কাদের বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে দেশের ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। কারণ একটাই-লুটপাটের রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ব্যক্তিগত স্বার্থ আর দলীয় স্বার্থই বড়। জাতীয় পার্টির নেতারা নিজে লাভবান হওয়ার জন্য রাজনীতি করেন না। দেশের জন্য রাজনীতি করেন। এখন দেশে উন্নয়ন হচ্ছে; কিন্তু বৈষম্য এর চেয়ে বহুগুণ বেশি হচ্ছে। পদে পদেই বৈষম্য হচ্ছে। ইউপি নির্বাচনে পর্যন্ত বৈষম্য হচ্ছে। আমাদের প্রার্থী-নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন নির্যাতনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। অথচ স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে দেশকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণ যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। সংবিধানের মূল নীতি থেকে সরে গেছে দেশ।
জিএম কাদের বলেন, আমরা ৩১ বছর ক্ষমতার বাইরে। আমাদের বিভক্ত করা হয়েছে-দলকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। নির্যাতন করে নেতাকর্মীদের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছে-পারেনি, পারবেও না। জাতীয় পার্টি আছে, থাকবে। জাতীয় পার্টি মানুষের হৃদয়ে আছে। জাতীয় পার্টি একক ক্ষমতায় যাবে-আমরা সোচ্চার হচ্ছি। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকেই চাইছে। সিরাজগঞ্জে আমাদের প্রার্থীকে মারধর করে তার কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের একজন প্রার্থীকে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। আমি বলতে চাই, কোনো নির্যাতনেই জাতীয় পার্টিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। জাতীয় পার্টি মানেই মঙ্গল। লাঙ্গল মানেই দেশের উন্নয়ন, মানুষের উন্নয়ন। সমাবেশে আবু হোসেন বাবলা বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ আজ জেগে উঠছে। তারা পরিবর্তন চায়। মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা কেবল জাতীয় পার্টিই গড়তে পারবে। পল্লীবন্ধুর আদর্শে বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা অন্যায়-দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেন না। দলকে ভালোবেসে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন ডালু, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ সোবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, যুগ্মদপ্তর সম্পাদক সমরেশ মণ্ডল মানিক, যুগ্মপ্রচার সম্পাদক শেখ মাসুকুর রহমান।