fbpx
হোম আন্তর্জাতিক চীনে ‘বিউবোনিক প্লেগ’ ভাইরাস মহামারি আকার নিতে পারে
চীনে ‘বিউবোনিক প্লেগ’ ভাইরাস মহামারি আকার নিতে পারে

চীনে ‘বিউবোনিক প্লেগ’ ভাইরাস মহামারি আকার নিতে পারে

0

করোনার পর চীনে এবার দেখা দিয়েছে ‘বিউবোনিক প্লেগ’ রোগ। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে এই রোগ মহামারির আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নভেম্বরে ইনার মঙ্গোলিয়ায় ৪ জনের শরীরে প্লেগ দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে ২ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন বেশি বিপজ্জনক নিউমোনিক প্লেগে। প্লেগ দেখা দেওয়ায় রবিবার সতর্কবার্তা জারি করেছে চীন সরকার।

বিউবোনিক প্লেগ কী?

বিউবোনিক প্লেগকে মধ্য যুগে বলা হত ব্ল্যাক ডেথ। অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই রোগ মূলত ইঁদুর, কাঠবেড়ালি জাতীয় প্রাণী থেকে ছড়ায়। আক্রান্ত মাছি কামড়ালে এই রোগ হতে পারে। এর মাধ্যমে প্লেগ ব্যাসিলাস, ওয়াই পেসটিস শরীরে ঢুকে যায় আর লসিকা নালী দিয়ে বাহিত হয়ে চলে যায় লসিকা গ্রন্থিতে, সেখানে নিজের ক্লোন তৈরি করে। লসিকা গ্রন্থি তখন ফুলে যায়, শুরু হয় ব্যথা। এর নাম বিউবো। এই রোগের অ্যাডভান্সড স্টেজে লসিকায় ঘা হয়ে যায়, ভরে যায় পুঁজে। তবে মানুষ থেকে মানুষে এই রোগের সংক্রমণ বিশেষ দেখা যায় না। ব্যাকটিরিয়া ফুসফুসে পৌঁছলে বিউবোনিক প্লেগ নিউমোনিক প্লেগের চেহারা নিতে পারে।

প্লেগের মধ্যে সব থেকে বিপজ্জনক এই নিউমোনিক প্লেগ। কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। বিউবোনিক প্লেগে মৃত্যুর হার ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ কিন্তু নিউমোনিক প্লেগের এখনো কোনও চিকিৎসা নেই। তাই তা সব থেকে ভয়াবহ। তবে ঠিক সময়ে ধরা পড়লে বিউবোনিক ও নিউমোনিক- দুই ধরনের প্লেগ থেকেই সেরে ওঠা সম্ভব।

সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক প্লেগ সারাতে পারে, তবে রোগ দেখা দেওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তা দিতে হবে। কারণ এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে অত্যন্ত দ্রুত বেগে। নিউমোনিক প্লেগ দেখা দিলে রোগীকে অবশ্যই আইসোলেশনে রাখতে হবে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তার কাছাকাছি আসতে হবে পিপিই পরে।

লক্ষণ

আচমকা ধুম জ্বর উঠে যাওয়া এই রোগের লক্ষণ। মাথায় ও গোটা শরীরে যন্ত্রণা হতে পারে, দুর্বলতা থাকতে পারে। বমি হতে পারে, থাকতে পারে বমি বমি ভাব। এছাড়া লসিকা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে, শুরু হতে পারে ব্যথা।

নিউমোনিক প্লেগের লক্ষণ দ্রুত দেখা দেয়, এমনকী সংক্রমণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। শ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা শুরু হয়, দম নিতে কষ্ট হয়, দেখা দেয় কাশি। থুতুতে রক্ত উঠতে পারে। মৃতদেহ থেকেও ছড়াতে পারে প্লেগ। যারা দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করছেন তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মৃতদেহের তরলে তখনো অবস্থিত ব্যাকটোরিয়া ছড়াতে পারে রোগ।

চতুর্দশ শতকে ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ মানুষের এই ব্ল্যাক ডেথ বা বিউবোনিক প্লেগে প্রাণ যায়। এই রোগ তিনবার মহামারির আকার নিয়েছে, মারা গেছেন কোটি কোটি মানুষ। বিউবোনিক প্লেগের জন্মও দক্ষিণ পশ্চিম চীনের ইউনানে। ইউনান থেকে আফিম কারবারীদের মাধ্যমে ১৮৯৪ সালে এই রোগ ছড়িয়ে যায় বিশ্বে, শুরু হয় তৃতীয় প্লেগ মহামারি। কিন্তু তারপর থেকে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে। ২০১০ থেকে ২০১৫-র মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ৩,২৪৮ জন গোটা বিশ্বে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ৫৮৪। মৃত্যুর হার ১৮ শতাংশ।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *