ক্ষমার পরেও কারাগারে ছিলেন ৯ বছর
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করে দেওয়ার পরও ৯ বছর কারাগারে ছিলেন জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার আজমত আলী।
যাবজ্জীবন সাজার রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে গত ২৭ জুন আপিল বিভাগ রায় দেয়।
ওই আদেশের ভিত্তিতে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আবু তাহের নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের ইজ্জত উল্ল্যা সর্দারের ছেলে আজমত আলী টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঘোড়ামারা এলাকার ভেঙ্গুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
১৯৮৭ সালের ১ এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম নিহত হন। ওই ঘটনায় আজমতকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় ১৯৮৯ সালের ৮ মার্চ জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়।
বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন আজমত। সেই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
পরে ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাই কোর্টের রায়েও হত্যার অভিযোগ থেকে খালাস পান আজমত আলী। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামিকে (আজমত আলী) নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়।
হাজির না হলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমতকে গ্রেপ্তার করে নিম্ন আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি।
২০১০ সালের ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে হাই কোর্টের রায় (খালাস) বাতিল করে বিচারিক আদালতের রায় (যাবজ্জীবন) বহাল রাখা হয়।
জানা যায়, গত বছর ১৪ অক্টোবর আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার বিষয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইডে আবেদন করেন। পরে সে আবেদন পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
“সে আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি উঠে আসলে আদালত এ রায় দেন।”