fbpx
হোম আন্তর্জাতিক ইরানে করোনা চিকিৎসায় ‘স্টেম সেল থেরাপি’
ইরানে করোনা চিকিৎসায় ‘স্টেম সেল থেরাপি’

ইরানে করোনা চিকিৎসায় ‘স্টেম সেল থেরাপি’

0

বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় চিকিৎসকরা লক্ষণ ভিত্তিক করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে চলেছেন।

তবে করোনা রোগীর চিকিৎসায় ইরানে যুক্ত হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। দেশটির হাসপাতালগুলোতে তীব্র লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। আর এতে আশার আলো দেখছেন গবেষকরা।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্টেম সেল মানবদেহের ইমিউন সিস্টেমের সাথে দ্রুত অভিযোজন করতে পারে। চলমান এ গবেষণায় ইরানি গবেষকরা মেসেঙ্কাইমাল কোষ ব্যবহার করছেন, যে কোষগুলো অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল। এসব কোষ মানবদেহের টিস্যুগুলোকে পূর্বের অবস্থায় নিয়ে আসতে এবং শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে, স্টেম সেল ব্যক্তির শরীরের শিরায় ইনজেকশন দেয়ার সাথে সাথেই ক্রিয়া শুরু করে। ইরানের তেহরানের দানেশওভারি ও শারিয়াতি হাসপাতালে এই গবেষণার প্রথম ধাপের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়।

এ গবেষণার সাথে জড়িত ইরানের রায়ান ইনস্টিটিউট ফর স্টেম সেল বায়োলজি অ্যান্ড টেকনলোজি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ডাক্তার হোসেন বাহারাভানদ অনলাইনে এক অনুষ্ঠানে জানান, ১৮ থেকে ৭০ বছরের রোগীদের মাঝে এ গবেষণা চালানো হয় এবং তাদের শরীরে মেসেঙ্কাইমাল কোষ ইনজেকশান করার পরে দেখা গেছে তারা তা সহ্য করেছেন এবং এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ১১ জন রোগীর মাঝে প্রথম দফা এ গবেষণা চালানো হয়। যদিও প্রথম ধাপের গবেষণায় কন্ট্রোল গ্রুপ ছিল না।

ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অংশ নেওয়া রোগীদের শরীরে স্টেম সেল ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগের পরে তাদের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাদের মাঝে ৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেন এবং অন্য ৫ জন রোগী মারা যান। যদিও তাদের মারা যাবার কারণ হিসেবে অন্যান্য রোগ যেমন হার্ট সমস্যা, অ্যাজমা ইত্যাদি কারণ উল্লেখ করা হয়।

ইরানের গবেষকরা জানিয়েছেন, এ গবেষণার দ্বিতীয় ধাপে কোষের নিঃসরণগুলোকে আলাদাভাবে বিভক্ত করা হবে, যার ফলে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে পার্থক্য করা সম্ভব হবে। তারা আরো বলেন, আমরা দাবি করছি না যে, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এটি একটি উত্তম উপায়। তবে আমরা বলতে পারি, এটি রোগীদের চিকিৎসায় একটি নিরাপদ উপায় হতে পারে।

মেসেঙ্কাইমাল স্টেম সেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের লিম্ফোসাইট এবং রেগুলাটরী ডেন্ড্রিটিক কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, যার ফলে রোগীর শরীরে অ্যান্টিভাইরাল সুরক্ষা বৃদ্ধি পায়। এবং সি-রিএকটিভ প্রোটিনের কার্যকরিতা হ্রাস করে, যা রোগ বৃদ্ধির প্রধান একটি নিদের্শক। সাথে প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোটিন TNF-a এর স্তর কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রোটিন IL-10 এর স্তর বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে।

স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা গবেষণা নিয়ে এই মূহুর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্লিনিকাল ট্রায়াল অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জর্ডান রয়েছে। অন্যদিকে প্রায় ১০ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টিম সেলের মাধ্যমে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস ইত্যাদি জটিল রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।

কামরুজ্জামান নাবিল,

শিক্ষার্থী, ডক্টর অফ মেডিসিন (এমডি) ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
tags:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *