৮ মাস পর প্রেমিকের মোবাইলে স্বামী হত্যার কল রেকর্ড ফাঁস !
বরগুনায় নাসির উদ্দীন নামে এক শিক্ষকের মৃত্যুর প্রায় নয় মাস পর তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ডিং পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজুর হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে এ রেকর্ডিং পাওয়া যায়।
পরে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু এবং মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে রাজু ও মিতুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার ফাতেমা মিতু বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার মো. মাহতাব হোসেনের মেয়ে এবং রাজু মিয়া ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।
২০২০ সালের ২৩ মে রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউপির গয়েজ উদ্দিনের ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন মারা যান। তার স্ত্রী মিতুর কাছে নাসিরের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই তার মরদেহ দাফন সম্পন্ন করেন নাসিরের স্বজনরা। নাসির-মিতু দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনার এসপি মুহাম্মদ জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, গত বছর ২৩ মে ঈদুল ফিতরের আগের রাতে নাসিরের মৃত্যুর খবর পান তার স্বজনরা। পরবর্তীতে নাসিরের স্বাভাবিক মৃত্যু জেনে তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই দাফন করা হয়। ঘটনার আট মাস ১৯ দিন পর তার স্বজনরা জানতে পারেন নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিলে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কম্বল চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
জানা গেছে, ফাতেমা মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বরগুনার একটি দোকানে চার্জ করাতে। সেখান থেকে তার মোবাইলটি হারিয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়া ফোনে নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা এবং পরবর্তী বিষয়ে রাজু ও মিতুর কথোপকথনের রেকর্ড জমা থাকে। পরে হারিয়ে যাওয়া ওই ফোনের কথোপকথন পায় নাসিরের স্বজনরা। এর প্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগ করেন নাসিরের বড় ভাই জলিল হাওলাদার।
এ বিষয়ে নাসিরের বড় ভাই ও মামলার বাদি মো. জলিল হাওলাদার বলেন, মিতুর কাছ থেকে আমার ভাইয়ের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাই আমরা। তখন আমাদের কোনো কিছু সন্দেহ হয়নি। তাই স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা নাসিরকে দাফন করি।
পরে মিতু ও রাজুর মোবাইল ফোনে কথোপকথনের বেশ কয়েকটি রেকর্ড পাই আমরা। সে রেকর্ডে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কথোপকথন রয়েছে। তখন আমরা নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হই।