fbpx
হোম জাতীয় ১১ দফা দাবি পূরণ না হলে সড়ক ছাড়বেন না শিক্ষার্থীরা
১১ দফা দাবি পূরণ না হলে সড়ক ছাড়বেন না শিক্ষার্থীরা

১১ দফা দাবি পূরণ না হলে সড়ক ছাড়বেন না শিক্ষার্থীরা

0

বাসচাপায় শিক্ষার্থী নাঈম হাসান ও মাঈনুদ্দিন নিহতের বিচার এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজও রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এবার ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ওপর সড়কে অবস্থান নেওয়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। 

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রামপুরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নেন।  এ সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গণপরিবহণ থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে দেখা গেছে।  পরে বাসগুলোকে ওই স্থানেই আটকে দেন তারা। এতে সড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঢাকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজ, একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সড়কে দেখা গেছে।

তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে মাঈনুদ্দিন নিহতের বিচারসহ ১১ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

দুপুর ১২টায় রাজধানীর রামপুরায় শিক্ষার্থীরা এই ১১ দফা দাবি, প্রস্তাবনা ও সড়ক নীতিমালা উত্থাপন করেন।  শিক্ষার্থীদের পক্ষে খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সায়মা ও ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নাদিমুর রহমান জুয়েল এসব দাবি উত্থাপন করেন।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—

১. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাঈম হাসান ও মাইনুদ্দিনের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

২. সারা দেশের গণপরিবহণে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ জন্য দিন-রাত বা ছুটির দিনসহ কোনো শর্ত জুড়ে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে।  সব রুটে বিআরটিসির বাস বাড়াতে হবে।

৩. সব ধরনের পরিবহণে নারীদের অবাধ যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে সৌজন্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস কার্যক্রম ও লাইসেন্স দানে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. সব সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

৬. সব রুটে প্রতিযোগিতা বন্ধে এক গ্রুপ বা কোম্পানির মাধ্যমে সব বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বাস অনুযায়ী মালিকদের মধ্যে লাভের টাকা বণ্টনের নিয়ম করতে হবে।

৭. শ্রমিকের নিয়োগপত্রে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। বাসচালক ও হেলপারদের চুক্তির পরিবর্তে সব গণপরিবহণ টিকিট পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. গাড়ি ও চালকের কর্মঘণ্টা এক নাগারে ছয় ঘণ্টার বেশি হতে পারবে না। বাসে দুজন চালক ও দুজন সহকারী থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল তৈরি করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহণ আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ট্রাক ও ময়লার গাড়ি চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।

১১. মাদক প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

সড়ক অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। তিনি যুগান্তরকে টেলিফোনে বলেন, শিক্ষার্থীরা আজও সড়কে অবস্থান নিয়ে আছেন। তারা বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকালই তারা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, আজ বেলা ১১টা থেকে একই দাবিতে আন্দোলন করবেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তারা আজ আন্দোলনে নেমেছেন। সড়ক যতক্ষণ শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ না হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *