fbpx
হোম অন্যান্য সূূর্যগ্রহণে রাসুল (সা.) যা করতেন
সূূর্যগ্রহণে রাসুল (সা.) যা করতেন

সূূর্যগ্রহণে রাসুল (সা.) যা করতেন

0

জাহিলি যুগে মানুষ ধারণা করত, বিশ্বে কোনো মহাপুরুষের জন্ম বা মৃত্যু কিংবা দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ প্রভৃতির বার্তা দিতে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে। ইসলাম এটাকে একটি ভ্রান্ত ধারণা আখ্যায়িত করেছে এবং ‘গ্রহণ’কে সূর্য ও চন্দ্রের ওপর একটি বিশেষ ক্রান্তিকাল বা বিপদের সময় বলে গণ্য করেছে। এ জন্য সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় মুমিনদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন এ সময়ে অন্য কাজকর্ম বন্ধ রেখে আল্লাহর তাসবিহ পাঠ, দোয়া, সালাত আদায় প্রভৃতি আমল করে থাকে।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর অন্যতম দুটি নিদর্শন। এগুলো কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের জন্য ‘গ্রহণ’ হয় না, অতএব তোমরা যখন তা দেখবে তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, তাকবির বলবে, সালাত আদায় করবে এবং সদকা করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

সূর্যগ্রহণের সময় নামাজ পড়ার নিয়ম

আরবিতে সূর্যগ্রহণকে ‘কুসুফ’ বলা হয়। আর সূর্যগ্রহণের নামাজকে ‘সালাতুল কুসুফ’ বলা হয়। দশম হিজরিতে যখন পবিত্র মদিনায় সূর্যগ্রহণ হয়, রাসুল (সা.) ঘোষণা দিয়ে লোকদের নামাজের জন্য সমবেত করেছিলেন। সেই নামাজের কিয়াম, রুকু, সিজদাসহ সব রুকন সাধারণ অভ্যাসের চেয়ে অনেক দীর্ঘ ছিল। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণকালে মুমিনদের করণীয় হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে একত্র হয়ে সালাত আদায় করা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকা। এ সালাত আদায় করা নফল। এই নামাজে আজান ও ইকামত দিতে হয় না।

তবে লোকজন ডাকার জন্য ‘আস-সালাতু জামিয়া’ (নামাজ সমাগত) বা এ জাতীয় বাক্য ব্যবহার করে ডাকার অবকাশ রয়েছে। সমাবেশস্থলে জুমার নামাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম উপস্থিত থাকলে তিনি সূর্যগ্রহণের সালাত জামাতে আদায় করাবেন। আর ইমাম বা তাঁর প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকলে একা একা সালাত আদায় করা যাবে। এ সালাত অন্য সালাতের চেয়ে অধিক দীর্ঘ হওয়া উচিত।

রাসুল (সা.) এ সালাতের কিরাত, কিয়াম, রুকু, সিজদাসহ অন্য আমলগুলোও অনেক দীর্ঘ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সালাতে কিয়াম, রুকু ও রুকু থেকে দাঁড়ানো অবস্থা অত্যধিক দীর্ঘায়িত করেছেন। এমনকি কিয়াম অবস্থায় প্রায় সুরা বাকারা তিলাওয়াত করার মতো সময় অতিবাহিত করেছেন এবং রুকু থেকে দাঁড়িয়ে এর চেয়ে তুলনামূলক কম সময় অবস্থান করেছেন। আর দ্বিতীয় রাকাত প্রথম রাকাতের চেয়ে ছোট করেছেন। তিনি কিয়ামের মধ্যে কিরাত ছাড়াও তাসবিহ, তাহলিল, তাকবির, তাহমিদ, দোয়া পড়েছেন বলে অন্য হাদিসে বর্ণিত আছে। সালাত আদায় শেষ হলে সূর্য পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত দোয়া করতে হয়। হানাফি মাজহাবে অন্য সালাতের মতো এ সালাতেও প্রতি রাকাতে একটি মাত্র রুকু আদায় করতে হয়। শাফিয়ি মাজহাবে প্রতি রাকাতে দুটি রুকু করতে হয়।

অবশ্য হাদিসের বর্ণনাগুলোতে এ সালাতে রাসুল (সা.) দুই বা ততোধিক রুকু করেছেন বলেই উল্লেখ রয়েছে। এ সালাতের রাকাত সংখ্যা দুই। তবে চার রাকাত বা তার বেশিও আদায় করা যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতি দুই বা চার রাকাতের পর সালাম ফিরাতে হবে। সালাতের শেষে কোনো খুতবা পড়তে হয় না। কোনো কোনো বর্ণনায় রাসুল (সা.) কর্তৃক খুতবা পাঠের কথা বর্ণিত থাকলেও তা সালাতের সংশ্লিষ্ট হিসেবে নয়; বরং তা ছিল ‘গ্রহণ’ সম্পর্কে জাহিলি যুগের ভ্রান্ত ধারণা নিরসনের জন্য দেওয়া বিশেষ বিবৃতি। (আল-আদাবুল মুফরাদ, ইমাম বুখারি)

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *