সারা বিশ্বে বছরজুড়ে ২৫০ সাংবাদিক জেলে, চীনে সর্বাধিক
সারা বিশ্বে বছরজুড়ে ২৫০ জন সাংবাদিক জেলে বন্দী হয়েছেন । আর সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানোর ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়েছে চীন। সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকগোষ্ঠীর দমনপীড়নের ফলে এসব ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের (সিপিজে) বার্ষিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, যাদেরকে জেলে পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী অথবা ভুয়া খবর প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের জেলে পাঠানো রাষ্ট্রগলোর মধ্যে অন্যতম হলো চীন, তুরস্ক, সৌদি আরব, মিশর, ইরিত্রিয়া, ভিয়েতনাম ও ইরান।
২০১৯ সালে ৪৮ জন সাংবাদিককে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে কমিউনিস্টশাসিত চীন। ২৫০ জন সাংবাদিককে জেলে পাঠিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। চীনের পরেই রয়েছে তুরস্ক। সেখানে এ বছর জেলে পাঠানো হয়েছে ৪৭ জন সাংবাদিককে। তুরস্কে গত বছর জেলে পাঠানো হয়েছিল ৬৮ জন সাংবাদিককে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেখানকার অবস্থার বাস্তব কোনো উন্নতি হয়নি।
সিপিজে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে কর্তৃত্ববাদ, অস্থিতিশীলতা এবং বিক্ষোভের কারণে সাংবাদিকদের জেলে যাওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে মিশরের সঙ্গে রয়েছে সৌদি আরবের নাম। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের জেল দেয়ার ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও মিশর একই অবস্থানে রয়েছে। সারা বিশ্বে তারা এক্ষেত্রে তৃতীয়। প্রতিটি দেশে ২৬ জন করে সাংবাদিককে জেল দেয়া হয়েছে। সৌদি আরবে ১৮ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রকাশ করা হয় নি। তবে তারা এখনো জেলে রয়েছেন। চারজন সাংবাদিক সহ রাজনৈতিক বন্দিদের প্রহার, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া এবং অনাহারে রাখার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিপিজে।
ওদিকে সেপ্টেম্বরে মিশরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়। তার আগেই বেশ কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বিক্ষোভ থেকে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির পদত্যাগ দাবি করা হয়েছিল।
সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক কর্মীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে এ বছর মোট আড়াইশ সাংবাদিককে জেল দেয়া হয়েছে। এ সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক অবস্থায়, যদিও ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৫৫ এবং ২০১৬ সালে রেকর্ড সংখ্যক ২৭৩ ছিল। সিপিজে তার রিপোর্টে বলেছে, দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের জেলে নেয়া উচিত নয় বলে বিশ্বাস করে সিপিজে। এতে চীনের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক সোফিয়া হুয়াং সুইকিনের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। তিনি হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভের বিষয়ে রিপোর্ট করেছিলেন। এ জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অক্টোবরে।