সভাসমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রের
বিশ্বজুড়ে মানুষের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকারকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এটা মানুষের সর্বজনীন অধিকার। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি সমানভাবে প্রযোজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কাছে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকদের কাছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন যে প্রশ্নের তালিকা পাঠিয়েছেন সে বিষয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে নেড প্রাইস বলেন, আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখা, শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা, শরণার্থীদের সুরক্ষা শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানাই।
ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে নেড প্রাইস বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব আছে। এর অংশ হিসাবে বেশকিছু ইস্যুতে, অভিন্ন স্বার্থবিষয়ক কিছু ইস্যু তুলে ধরার এবং একই সঙ্গে উদ্বেগ তুলে ধরার মতো অবস্থানে আছি আমরা। আমরা নিয়মিতভাবে মানবাধিকার ইস্যুগুলো তুলে ধরি বাংলাদেশ সরকারের কাছে। এটা আমরা প্রকাশ্যে করি, যেমনটা আগেও করেছি। আবার এটা আমরা প্রাইভেটলিও করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাই আমরা। আরও আহ্বান জানাই-আইনের শাসন, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা শক্তিশালী করতে। এছাড়া আহ্বান জানাই-শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা, একই সঙ্গে শরণার্থীদের সুরক্ষা শক্তিশালী করতে। এসব অধিকারকে শক্তিশালী করতে এবং তা সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে তাদের আমরা কমপক্ষে ৮০০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছি। শুধু ২০২১ সালে খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে কমপক্ষে ৩০ কোটি ডলার দিয়েছে ইউএসএইড। একই সঙ্গে গণতন্ত্রকে সমুন্নত করা এবং সুশাসন এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনও রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি হলো-সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, যে কোনো দেশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভের অধিকারের প্রতি। এটা সর্বজনীন অধিকার। তা বাংলাদেশের জনগণের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য, যেমনটা সারা বিশ্বে প্রযোজ্য। বিশ্বজুড়ে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই, আমরা নিরাপত্তা সার্ভিস, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী, নাগরিক ফোর্সের প্রতি আহ্বান জানাই এসব অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে। আমরা আহ্বান জানাই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দিতে, যাতে তাদের বক্তব্য শোনা যায়।
ব্রিফিংয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য নিয়েও নেড প্রাইসকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।