লালমনিরহাটে জুয়েল হত্যার ঘটনায় খাদেমসহ গ্রেফতার আরও ৫
লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদে পবিত্র কোরআন অবমাননার মিথ্যা গুজব তুলে শহীদুন্ননবী জুয়েলকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদের মধ্যে ওই মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ। লালমনিরহাট ডিবি ও থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়।
তবে থানা হেফাজতে থাকা আসামীদের নাম জানাননি পুলিশ। এ ব্যাপারে পাটগ্রাম থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, বুড়িমারীতে সেদিনের ঘটনাটি স্পর্শকাতর যার কারণে এ বিষয়ে মিডিয়া কর্মী বা সাংবাদিকদের সাথে কেউ কথা বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি এসপি কিংবা মামলার আইও ডিবি ইন্সপেক্টর ওমর ফারুখের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেয়া হয়। এসব মামলার আইও মাহমুদ এর ফোনে কল করলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্তের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত অবধি দীর্ঘসময় বুড়িমারীতে আটক অজ্ঞাত দু’জন লোকের মধ্যে একজনকে পুলিশ নিরাপদে সরিয়ে নিলেও অপরজনকে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় মসজিদের ঈমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ পরদিন সন্দেহভাজন আরও ৬/৭ জনকে আটক করার পর খাদেমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়।
সেদিনের ঘটনায় পুলিশ এ্যাসাল্ট, ইউনিয়ন পরিষদ ভাংচুরের ঘটনায় ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পরপর তিনটি মামলা রেকর্ড করা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী ৫ জনকে আদালতে হাজির করলে লালমনিরহাট জুডিশিয়াল আদালত -৩ এর বিজ্ঞ বিচারক ফেরদৌসি বেগম জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং মামলাটি লালমনিরহাট ডিবিতে হস্তান্তর করে সুষ্ঠু তদন্তের কথা বলেন।
ডিবি ইন্সপেক্টর মামলার রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত মঙ্গলবার শুনানীর দিন ধার্য্য করেন বলে আদালত সুত্রে জানা যায়। এরিমধ্যে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন।
উল্লেখ্য যে, গত বৃহস্পতিবার বুড়িমারীতে ঔষধ কিনতে এসে রংপুরের বাসিন্দা জুয়েল ও তার বন্ধু সুমন কোরআন অবমাননার গুজবে জনরোষের রোষানলে পরেন। সে সময় হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভেঙ্গে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলেন। এ মামলাগুলো ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।