লঞ্চডুবির ঘটনায় চালককে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত
বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় এমভি ময়ূর-২ লঞ্চের চালকের বেপরোয়া চালানোকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দিচ্ছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি।
প্রত্যক্ষদর্শী, বেঁচে যাওয়া যাত্রী, বিআইডব্লিউটিএ, পুলিশ কর্মকর্তা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী ৬ জুলাই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্র জানায়, ময়ূর-২ লঞ্চটি সদরঘাটে আসার পথে প্রথমে মর্নিং বার্ডকে পেছন দিকে ও পরে সামনের দিকে ধাক্কা দেয়। এতে করে কয়েক সেকেন্ডে মধ্যে লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ছাড়া মর্নিং বার্ডের মাস্টার (চালক) আসনে যার থাকার কথা ছিল তিনি ছিলেন না। তার পরিবর্তে সেখানে ছিলেন তার সহকারী। তিনিও লঞ্চডুবিতে মারা যান। লঞ্চের মাস্টার ও ড্রাইভারের অদক্ষতা এবং অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ময়ূর-২ মালিকের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সি হর্স কর্পোরেশনের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৬ জুলাই প্রতিবেদন জমা দিবেন।
এ ছাড়া সদরঘাটের দুই পাড়ে লঞ্চ বেঁধে রেখে চলাচলের পথ সরু করে ফেলা, একই নদীতে ছোট ও বড় লঞ্চ চলাচলের বিষয়ে করণীয় নিয়ে সুপারিশ তৈরি করেছে কমিটি। দুটি লঞ্চেরই ফিটনেস সনদ ছিল। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনের বক্তব্য নিয়েছেন। এর মধ্যে মর্নিং বার্ড লঞ্চের বেঁচে যাওয়া ১১ যাত্রীও রয়েছেন। তারা ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা লঞ্চডুবির কারণ প্রসঙ্গে জানান, ময়ূর-২ লঞ্চটি হঠাৎ করেই মর্নিং বার্ড লঞ্চের দিকে চেপে আসছিল। প্রথমে পেছন দিকে ধাক্কা দিলেই লঞ্চের ভেতরে হইচইসহ কান্নাকাটি শুরু হয়। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সামনে থেকে আরেক ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। তারা এ ঘটনায় ময়ূর-২ লঞ্চের মাস্টার, ড্রাইভার ও সুকানিকে দায়ী করেছেন। লঞ্চ দুর্ঘটনার জন্য ময়ূর-২ লঞ্চের চালকদের অদক্ষতা ও বেপরোয়াভাবে চালানোকেই দায়ী করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কয়েকবার চিঠি ও ফোন দেয়ার পরও ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক ও চালক তদন্ত কমিটির কাছে কোনো তথ্য দেননি। ঘটনার পর থেকেই তারা আত্মগোপনে আছেন।
সাত দিনের মধ্যে কমিটি দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে শনাক্ত এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করার জন্য বলা হয়। ৭দিন হবে আগামী ৭ জুলাই। এর একদিন আগে ৬ জুলাই প্রকাশ করা হবে তদন্ত প্রতিবেদন।