fbpx
হোম অন্যান্য রহস্যঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম, অভিশপ্ত হওয়ার কারণ !…
রহস্যঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম, অভিশপ্ত হওয়ার কারণ !…

রহস্যঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম, অভিশপ্ত হওয়ার কারণ !…

0

লাল অডিটোরিয়াম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ প্রভাষ কুমার বড়ুয়া সড়ক দিয়ে হেঁটে যেতেই বাম দিকের এই দালানটিতে চোখ আটকে যায় সবার। পাহাড়ের গা ঘেঁষে অপরূপ কারুকার্য শোভিত তৈরি সুবিশাল এই ভবনটি উদ্বোধনের দুই বছরের মাঝেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বিগত ২৮ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই অডিটোরিয়াম। এই ২৮ বছরে দুইবার অডিটোরিয়ামটি সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা কার্যকর হয়নি। অডিটোরিয়ামটির বর্তমান অবস্থান চবি কেন্দ্রীয় মসজিদের পিছনে বা এফ রহমান হলের সামনের দিকেও বলা যায়। এটি যিনিই দেখেছেন তিনি অবশ্যই প্রশ্ন করেছেন।

এটা কি? কিসের বিল্ডিং? আশ্চর্যের ব্যাপার হলো অডিটোরিয়াম সম্পর্কিত উত্তরগুলো নিয়ে! কেননা উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে নানাবিধ বৈচিত্র্যময়তা উপলব্ধি করা যায়। কারো মতে, অডিটোরিয়াম কেউ বলে পুরানো পুলিশ ফাঁড়ি, কেউ ভূতের বাড়ি, কেউ সাপের বাড়ি, কেউ পরিত্যক্ত ভবন আবার কেউ কেউ রহস্যঘেরা অডিটোরিয়ামও বলে থাকে। এছাড়াও বলা হয়, এখানে আগে চবির সব রকম অনুষ্ঠান হতো, তবে এখন আর হয় না। এই ভবনটি আসলে অভিশপ্ত! এখানে কোনো অনুষ্ঠান করলে কয়েকদিনের মধ্যেই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ একজন মারা যেত বা তীব্র অসুস্থ হয়ে যেত। এখানে কোনো প্রোগ্রাম ঠিকভাবে করা যেত না। প্রায়ই সাপের উপদ্রব ভবনটিতে লক্ষ্য করা যায়। যদিও বাইরে কোনো সাপ ছিল না। ছাদের সমস্যা না থাকলেও অযথা পানি পড়তো। এখানে মাঝে মাঝে অনেক রাতে একটা মেয়েকে ছাদে হাঁটতে দেখা যায়,আর এটা অনেকেই নাকি দেখেছে! আত্মহত্যার কাহিনীও শোনা যায়।

অডিটোরিয়ামটির নকশা প্রণয়ন করেছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। এই অডিটোরিয়ামটির বর্তমান অবস্থা, দুই দিকে বন জঙ্গল দ্বারা আচ্ছাদিত। তার সামনের দিকে রয়েছে ব্যস্ত রাস্তা। যার একপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সোহরাওয়ার্দী হলে কর্মরত এক প্রবীণ কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি জানালেন, ১৯৮৬ সাল থেকে এটি বন্ধ হয়ে আছে। একসময় এখানে পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। সেখানে পুলিশ থাকতো। কখনো দেখা গিয়েছিল এখানে নাটকের মঞ্চও তৈরি করা হতো। বিভিন্ন মিটিং-সমাবেশও এখানেই সম্পন্ন হতো। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এখন অডিটোরিয়ামটা সাপের আড্ডাখানায় তৈরি হয়েছে। এজন্যই এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসের আরেক বয়োবৃদ্ধ রিকশাচালক জানান, এই অডিটোরিয়ামে কোনো অনুষ্ঠান করা যায় না। আমরা যতটুকু শুনেছি এখানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে একঝাঁক সাপ এসে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্বলিক এসিড ছিটিয়েও সাপের উপদ্রব থামাতে ব্যর্থ হয়। আবার গভীর রাতে এখানে ঘটে ভৌতিক ঘটনা। কখনো ছাদে নারী দেখা যায়। ভেসে আসে গানের এবং কান্নার সুর। বর্তমানে ভবনটিতে তালা ঝুলানো। এর ভেতরে আর কেউ প্রবেশ করতে পারেনা। এটি কীটপতঙ্গ ও পাখিদের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইফুল আলম মন্তব্য করেন, ভবন নির্মাণের ত্রুটিজনিত কারণে এটিকে পরিত্যক্ত করা হয়। তাছাড়া এখানে সাপের উপদ্রব ছিল বলেও শোনা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী লিওন রিজভী জানায়, একদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে এই ভবনটির সামনে দিয়ে হেঁটে আসার সময় ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিল।

ভবনটি দূর থেকে দেখলে একটি ভুতুড়ে বাড়ির মতোই মনে হয়। ভবনটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। শুনেছি এখানে সাপের উৎপাত ছিল অনেক। প্রায়ই ভরা সভায় দলে দলে সাপ চলে আসত কোথা থেকে যেন। বার বার এমন ঘটনা ঘটায় এটা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ, বলছিলেন ডালিম রায়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২০০ আসন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ মিলনায়তনটি ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর সংস্কার করা হয়নি। এর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে অডিটোরিয়ামের সকল কার্যক্রম।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *