fbpx
হোম আন্তর্জাতিক যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে কেরালা
যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে কেরালা

যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে কেরালা

0

করোনা ভাইরাসের থাবায় ভারতে এখনো থেমে নেই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা। প্রতিদিনি বেড়ে চলেছে আক্রান্ত আর মৃত্যু।

এরি মধ্যে ভারতের কেরালা রাজ্য করোনা মোকাবিলায় অনন্য উদাহরণ দেখিয়েছে। যে রাজ্যে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। কিন্তু কম সময়ে নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপের কারণে করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্যটি।

ভারতের অন্যান্য রাজ্যে করোনা এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অনেকটা দিশেহারা ভারতের কেন্দ্রিয় সরকারও। যথাযথ পদক্ষেপ নিলেও মানছেন না সাধারণ মানুষ। তাই যে পদক্ষেপগুলো কেরালা রাজ্যে নেওয়া হয়েছে তা ভারতের বাকি অংশের জন্য মডেল হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা অভিমত দিয়েছেন।

 

যেভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে কেরালা রাজ্য সরকার: কেরালায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর পরই ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ করোনা ভাইরাসের হটস্পট হিসেবে পরিচিত ৯টি দেশ থেকে ফেরা মানুষকে বিমানবন্দরে অনেক কড়াকড়ি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারির পর এসব দেশ থেকে যারা ফিরেছেন তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। অথচ গোটা ভারতে এসব কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল আরও দুই সপ্তাহ পরে।

তবে কড়াকড়ির মধ্যেও ইতালি ফেরত এক দম্পতিকে থামাতে পারেনি রাজ্য সরকার। ওই দম্পতি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে রিপোর্ট করেনি। তাদেরকে শনাক্ত করার আগেই তারা বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল, বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছিল। তাদের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারে এমন ৯০০ মানুষকে শনাক্ত করে আইসোলেশনে পাঠানো হয় শুধুমাত্র করোনার ঝুঁকি কমানোর জন্য।

করোনায় নিয়োজিত সেখানকার প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। নিয়মিত রোগীদের খবর রাখা, খাবার নিয়মিত যাচ্ছে কিনা ইত্যাদি তদারকিতে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে চিকিৎসা দিয়ে গেছেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীদের জন্য।

করোনা নিয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ শাহিদ জামিল কেরালার পদক্ষেপ নিয়ে বলেন, কেরালার পদক্ষেপ কার্যকর হয়েছে কারণ রাজ্য সরকার একইসঙ্গে কঠোর ও মানবিক ছিল। গণহারে পরীক্ষা, আইসোলেশনে নেওয়া, আক্রান্ত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা করা এগুলো হলো প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর উপায়। যা তারা করতে পেরেছে।

রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী শালিজা জানিয়েছিলেন, তাদের রাজ্যের পদক্ষেপগুলো ভারতের অন্য কোথাও প্রয়োগ করা সহজ হবে না। কারণ কেরালায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা কমিউনিস্ট শাসনামলে জনগণের শিক্ষা ও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে রাজ্য।
করোনা মোকাবিলায় কেরালা সরকার প্রায় ২৬০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক প্যাকেজও ঘোষণা করেছিল। স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে কাঁচা অবস্থায় নাস্তা পৌঁছে দেওয়া, বাড়িতে বাড়িতে ইন্টারনেট সুবিধা অব্যাহত রাখতে সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে সমন্বয় করার কাজ করেছে তারা।
বিশেষ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থার শক্ত অবস্থানের কারণে দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ কিটও ব্যবহার করেছে রাজ্যটি। হটস্পটগুলোতে এ কিটগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২ মাসের পেনশন অগ্রিম দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এভাবেই ধীরে ধীরে কেরালা রাজ্য করোনা মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে  অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। তবে তারা  এখনো থেমে নেই। পদক্ষেপগুলো প্রয়োগে এখনো তৎপর রয়েছে রাজ্যটির সরকার।
এক প্রতিবেদনে কেরালায় করোনা মোকাবিলার এই অসাধারণ সফলতার গল্প তুলে ধরে বলা হয়েছে, দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা, তীব্র মাত্রায় সংক্রমিতদের শনাক্ত করা, দীর্ঘ সময়ের কোয়ারেন্টাইন জারি রাখা, কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত শাটডাউনের শিকার আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য হাজারো আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং খাদ্য সংকটে থাকা লাখ লাখ মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করে গোটা ভারতের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কেরালা রাজ্য।
Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
1

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *