যেতে হবে বহুদূর:সৈয়দ আনোয়ার হোসেন
পঞ্চাশ বছরের মধ্যে স্বাধীনতার সপক্ষের বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছর পায়নি। কারণ পঁচাত্তর থেকে ছিয়ানব্বই এবং ২০০১ থেকে ২০০৭ যারা ক্ষমতায় ছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, পাকিস্তানপন্থি। মিনি পাকিস্তানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিচালনা করছিল। এমনকি রাজাকারের হাতে বা গাড়িতেও জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। কাজেই ওটি হারানোর সময়, নষ্ট সময়। বাকি সময়টুকু নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি।
প্রথম বৃত্তিটা হবে বঙ্গবন্ধুর ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ এর বক্তব্য- আমি এ কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। যার ভিত্তি কোনো ধর্মভিত্তিক হবে না। বাংলাদেশের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। পরে জাতীয়তাবাদ সংযুক্ত হয়েছিল। এই সময়ে বাংলাদেশ কতটুকু আদর্শ রাষ্ট্র হয়েছে সেটি আমার বিবেচনার প্রসঙ্গ। যদিও আদর্শ রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নিয়ে কেউ একমত হতে পারবে না। তবে এটুকু বলা যায়, বাংলাদেশ বৈষয়িক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে প্রভূত। যার ফলে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশের মনুষ্যত্ব ধ্বসে গেছে। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার জন্য সোনার মানুষ চাইতেন। সেই সোনার মানুষ এখন সোনার মানুষ নেই আর কেউ। মনুষ্যত্বের অবমাননা এত কঠিন যে এ বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে বিশেষ প্রেক্ষাপটে।
১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার আমাদের তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল, সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার। তিনটির একটিও আমরা অর্জন করতে পারিনি। আমরা এই সময়ে এগিয়েছি অনেকদূর। কিন্তু যেতে হবে আরো বহুদূর। বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে কীনা তা-ও বিবেচ্য।