মুক্ত গণমাধ্যম নিয়ে তরুণ সাংবাদিকের অব্যক্ত কথা
প্রথমে বলে রাখি, ‘সাংবাদিকতায় আমার এক যুগ হয়নি এখনো। বয়স চলছে ২৬।’ ব্যক্তিগত পরিচিতির কারণে অনেকেই আমাকে ইচরেপাকা/ভুঁইফোড় বলে মানসিকতার ভিত্তিতে এড়িয়ে যেতেই পারেন। এটা নিয়ে চিন্তিত হইনা কভু। কারণ আপনি কখনোই দুটো ভাল পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন না। আপনি সংকীর্ণমনা/স্বার্থপর। আমার যোগ্যতা, প্রচেষ্টা আর পরিকল্পনাই ভবিষ্যত নিশ্চায়ন করবে।
মূল কথায় আসি। বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবস আজ। যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আসি। গণ শব্দের অর্থ কী ? গণমাধ্যম কার স্বার্থ দেখবে ? উত্তর হবে নিশ্চয় গণের/জনতার। বাস্তবে কি সেটা আছে ? মুক্তগণমাধ্যম বলা হলেও দেশে গণমাধ্যম কতটা মুক্ত ?
নানামুখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে সময় অতিবাহিত করছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম। সাধারণ মানুষের চাহিদানুযায়ী সংবাদ মূলধারার গণমাধ্যম দিতে পারছে কী? গণমাধ্যমকে বাঁচতে হলে গণমানুষের চাহিদা নিয়ে চিন্তার বিকল্প নেই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অর্থ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের স্বাধীনতা। প্রতিবন্ধকতা এখানেই। আপনি যেটিকে বস্তুনিষ্ঠ বলছেন, সরকারি দলের নেতারা স্বার্থবিরোধীতা দেখলেই সেটিকে বিভিন্ননামে অভিহিত করারর চেষ্টা করেন।
সাংবাদিকরা আদালত ইস্যুতে ঠিক কতটুকু লিখতে পারবেন, তারও একটি পরিষ্কার নির্দেশনা থাকা দরকার। আদর্শিক অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীর স্বাধীনতা থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু উল্টো এটি গণমাধ্যম মালিকের স্বাধীনতা। আবার মালিকও স্বাধীনতা হারান বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে। সম্প্রতি বসুন্ধরা এমডির ঘটনাটি লক্ষ্য করতে পারেন। তাহলে কে স্বাধীন ?
মুক্তগণমাধ্যমের পরিচয় তাহলে কী ? ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ‘নেতিবাচক প্রচারণা’র দায়ে সর্বোচ্চ সাজা ১৪ বছরের কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটি নিয়ে বলতে চাইনা, শুধু বলব- এটি কি মুক্তগণমাধ্যমকে প্রভাবিত করে না ? ফলস্বরুপ কোনো সাংবাদিক দুর্নীতি বা স্থানীয় অপরাধী চক্র নিয়ে অনুসন্ধান করলে তারা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন, ঘটে মৃত্যুও। সেতো সাগর-রুনির ইতিহাস। হয়তো একারণেই সম্পাদকগণ জেল বা গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঝুঁকি এড়াতে চান কৌশলে।
মুক্তসাংবাদিকতার অপব্যবহার কি আমরা করছি না ? মুক্তগণমাধ্যম অর্থ কি শুধু মুক্তভাবে সাংবাদিকতা ? আমরা পাঠক-দর্শককে কতটা মানসম্মত, কতটা বিশ্বাসযোগ্য এবং কতটা তথ্যনির্ভর কন্টেন্ট দিতে পারছি, সেটা নিয়ে গবেষণা করিনা। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্তগণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ ও সংকীর্ণতার উর্ধ্বে যোগ্যতা/কার্যক্রমের ভিত্তিতে প্রত্যেকের যথাযথ মূল্যায়নই হোক বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবসের অঙ্গিকার।