মানসিক অস্থিরতা পাপের প্রথম শাস্তি
গুনাহের প্রথম শাস্তি হলো মানসিক অস্থিরতা। পাপী নারী-পুরুষ আল্লাহর আনুগত্য ও নিষ্কলুষতার আনন্দ, স্বাদ ও প্রশান্তির কথা অনুধাবন করলে তারা বুঝত গুনাহের অর্জিত স্বাদের চেয়ে হারানো ঈমানের স্বাদ অনেক বেশি।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা যাকে হেদায়াত দিতে চান, তার অন্তরকে তিনি ইসলামের জন্য প্রসারিত করে দেন। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান, তার অন্তরকে তিনি সংকীর্ণ ও বক্র করে দেন, যেন সে আকাশে আরোহণ করছে, তেমনিভাবে আল্লাহ তাআলার ওপর যারা ঈমান আনেনি তাদের ওপর আজাব অবতীর্ণ করেন।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১২৫)
ঈমানদার লোকদের হৃদয় সর্বদা প্রফুল্ল ও প্রশস্ত থাকে। আর পথভ্রষ্টদের অন্তর সব সময় সংকীর্ণ, অস্থির, দুর্ভোগে আক্রান্ত ও বিপদসংকুল হয়ে থাকে। তাই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যাদের হৃদয় আমি জিকির থেকে বিমুখ করেছি এবং যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে আপনি তাদের অনুসরণ করবেন না, সে সব কাজেই সীমা লঙ্ঘন করে।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ২৮)
আল্লাহর অবাধ্য হয়ে যারা সুখ-শান্তির সন্ধানে থাকে, তাদের ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে অশান্তি নেমে আসে। তাদের জন্য এই বিস্তৃত পৃথিবী সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। জীবনযাত্রা দুঃখ-দুর্দশায় ভরে ওঠে। এমনকি যে আরাম-আয়েশের জন্য তারা পরিশ্রম করে, তা-ই একসময় তাদের জন্য আজাব ও শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য।’ (সুরা : আজ জারিয়াত, আয়াত : ৫৬)
এ কারণে দেখা যায়, উন্নত বিশ্বের মানুষের জন্য আনন্দ-প্রমোদ ও ভোগ-বিলাসের অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনা থাকলেও তাদের অন্তরে নেই প্রশান্তির ছোঁয়া। সবার মধ্যে বিরাজ করে বিষণ্নতা ও অস্থিরতা। তা ছাড়া আত্মহত্যার প্রবণতা এসব দেশেই বেশি দেখা যায়। এর কারণ হলো, ‘আর যে আমার জিকির থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাত্রা সংকীর্ণ ও দুঃখে ভরপুর হয়ে ওঠে।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি কাফিরদের অন্তরে ভীতি ঢুকিয়ে দেব, তারা আল্লাহর সঙ্গে শিরক স্থাপন করেছে, অথচ এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কোনো কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম, এবং জালিমদের আশ্রয়স্থল কতই না নিকৃষ্ট।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫১)
পক্ষান্তরে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন নারী ও পুরুষ কোনো ভালো কাজ করলে আমি তাকে সুন্দর জীবন দান করব এবং তাদের কৃতকর্মের চেয়ে উত্তম প্রতিদান দান করব।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)।