মহানবী (সা.)’র কার্টুন প্রদর্শনে ফ্রান্সের নিন্দা জানাল সৌদি
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে আপত্তিজনক কার্টুন ও সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলামকে জড়ানোর যে কোনো উদ্যোগের নিন্দা করেছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, বাক স্বাধীনতা এবং এর সংস্কৃতি শ্রদ্ধা, সহনশীলতা এবং শান্তির ভিত্তিতে হওয়া উচিত; যা ঘৃণা, সহিংসতা এবং চরমপন্থার উৎপত্তি ও সহাবস্থানবিরোধী চর্চা প্রত্যাখ্যান করে। তবে এতে অন্যান্য কয়েকটি মুসলিম দেশের মতো ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মহানবী (সা.) এর বিতর্কিত ছবি প্রদর্শনীর কারণে তুরস্ক, ইরানসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ফ্রান্সের নিন্দা ও সমালোচনা করছে। ইসলামবিরোধী অবস্থানের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা ফ্রান্সের পণ্য-সামগ্রী বর্জনের ডাক দিয়েছে। প্যারিস থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাবনা পাস হয়েছে।
বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়া হয়েছে। সৌদিতেও বর্জনের অন্যতম টার্গেটে পরিণত হয়েছে ফরাসি সুপারমার্কেট চেইন ক্যারেফোর। ফরাসি এই সুপারমার্কেটচেইনের পণ্য বর্জনের ডাক সৌদি আরবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রেন্ড হয়েছে। ভোক্তাদের এই মার্কেটের পণ্য কেনা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
যদিও রয়টার্সের প্রতিবেদকরা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের ক্যারেফোরের অন্তত দুটি দোকান পরিদর্শন করে অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের মতো সেগুলোতে ব্যস্ততা দেখতে পেয়েছেন। এই কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বলেছেন, তারা এখনো পণ্য বর্জনের প্রভাব আচ করতে পারেননি। কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে একটি দোকান পরিদর্শন করেছেন রয়টার্সের প্রতিনিধি। এ সময় তিনি ফরাসী কোম্পানি লরিয়েলের উৎপাদিত প্রসাধনী ও রূপচর্চার বিভিন্ন পণ্য দোকানের তাকে দেখতে পাননি। দোকানের মালিক বলেছেন, ফরাসি এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য তারা সরিয়ে ফেলছেন। কুয়েতি এই দোকানের অন্তত ৭০টি আউটলেট রয়েছে; দেশটিতে তারা লরিয়েলের পণ্য বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জর্ডান ও কাতারের কিছু সুপারমার্কেটের ডিসপ্লে থেকেও ফ্রান্সের তৈরি সৌন্দর্য চর্চার উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে দেশটির এক স্কুল শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত কার্টুন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের কারণে ক্ষুব্ধ ওই কিশোর স্কুল শিক্ষককে হত্যা করেন। পরে ফ্রান্সের সরকার ওই স্কুল শিক্ষককে দেশটির সর্বোচ্চ মরণোত্তর পদকে ভূষিত এবং বিভিন্ন ভবনের গায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত সেই কার্টুনের প্রদর্শন শুরু করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই কার্টুনের প্রদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।