বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় জাবির আরেক শিক্ষক !
বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইব্রাহিম খলিল।
এ বছরের বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের দুই শতাংশের তালিকা প্রকাশ করে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত এক জরিপে ২.৫৬ স্কোর অর্জনের মাধ্যমে তিনি ‘কমপ্লিমেন্টারি এ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিন, ফুড সায়েন্স ও ক্লিনিক্যাল মেডিসিন’ শাখার ৯৫১৮ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে ৫৪তম স্থান অর্জন করেন।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গবেষণা কার্যক্রমে অবদানের ভিত্তিতে গবেষকদের বৈশ্বিক ডাটাবেজ তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘প্লোজ বায়োলজি’নামক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকের এ তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে ড. খলিলের ১১০টি প্রকাশনা রয়েছে। তার প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ সমূহ থেকে ২০১৯ সালে মোট ৪৫০ বার সাইটেড (উদ্ধৃত) হওয়ায় ‘সাইটেশন ইম্প্যাক্ট’ এ বিশ্বের সেরা শতকরা ২ ভাগ বিজ্ঞানীর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার বিরল সম্মাননা অর্জন করেছেন। তার গবেষণার বিষয় ‘Complementary and Alternative Medicine’। তিনি মূলত মধুর ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে গবেষণা করেন।
এর আগে, তিনি যুক্তরাজ্যের জার্নাল অব ফুড সায়েন্সে প্রকাশিত মালয়েশিয়ান মধুর উপর একটি গবেষণা কাজের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সটিটিউট অব ফুড টেকনোলজিস্টস থেকে ২০১৪ সালে ‘মোস্ট সাইটেড পেপার’ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
এছাড়া ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স মালয়েশিয়া থেকে মানসম্মত প্রকাশনার জন্য একাধিকবার ‘মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছেন।
ড. ইব্রাহিম খলিল ২০০৪ সালেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পাঁচ বছর শিক্ষকতার পর শিক্ষা ছুটি নিয়ে তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স মালয়েশিয়াতে পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো হিসেবে যোগদান করেন। তিনি সেখানে মালয়েশিয়ান মধুর উপর কাজ শুরু করেন। ২০১২ সালে দেশে এসে দুই বছর শিক্ষকতার পর আবার ২০১৪ সালে সেখানে ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো হিসেবে যোগদান করেন।
তার এই কৃতিত্বের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি থেকে এক অভিনন্দন বার্তায় জানানো হয়, অধ্যাপক খলিল সহ উক্ত তালিকায় বাংলাদেশের মোট ৫৬ জন বিজ্ঞানী স্থান পেলেও মাত্র ৫ শতাংশ ‘সেল্ফ সাইটেশন’ নিয়ে তার এরকম একটি মর্যাদাজনক তালিকায় স্থান পাওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়।
বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকের তালিকায় নিজের নাম দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ড. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘আমি সবসময় যেটা বিশ্বাস করি এবং আমরা ছাত্রদের যেটা বলি একদম মিনিমাম রিসোর্স নিয়েও অনেক কিছু করা যায়। সব সময় চেষ্টা করতে হবে; যা আছে তাই নিয়েই কাজ শুরু করার। আমার এই ফিল্ডে যারা কাজ করে তারা আমার গবেষণাগুলো দেখলেই বুঝবে এগুলো মিনিমাম রিসোর্স থেকে করা।’
এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এ মামুনও এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন।