fbpx
হোম জাতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন সবারই মাস্ক ব্যবহার জরুরি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সবারই মাস্ক ব্যবহার জরুরি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সবারই মাস্ক ব্যবহার জরুরি

0

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী সাধারণ নাগরিকদেরও মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, কানাডাসহ অনেক দেশ। ফলে, বিশ্বব্যাপী সার্জিকাল মাস্কের সংকট তৈরি হয়েছে।

দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) সংকট দেখা দেওয়ায় নাগরিকদের নিজ উদ্যোগে মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

সার্জিক্যাল মাস্কসহ অন্যান্য উন্নত মাস্কগুলো কেবল সামনের সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সাধারণ মাস্ক করোনাভাইরাস ঠেকাতে কতখানি কার্যকর তা নিয়ে তেমন কোনো ক্লিনিক্যাল গবেষণা না হলেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক সংকটের মধ্যে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ ভবিষ্যতে বিভ্রান্তি ও সংঘর্ষ ডেকে আনতে পারে।

করোনা প্রতিরোধে মাস্ক কার্যকর কিনা সেটির প্রমাণ না থাকলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, ‘মাস্ক কখনোই হাত ধোঁয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিকল্প নয়। খুব জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, মাস্ক ব্যবহার করলেই সুরক্ষিত থাকা যাবে।’

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান বেঞ্জামিন কাওলিং বলেন, ‘এই ধারণাটি মূলত ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’র মতো। আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ নেই তারা মাস্ক পরে সংক্রমণ রোধ করতে পারবেন।”

সিঙ্গাপুরে প্রাথমিক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, যারা অসুস্থ ও ডাক্তারের কাছে যাবেন কেবল তাদেরই বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তবে, গত সপ্তাহে প্রকাশিত সরকারি নির্দেশনায় সার্জিক্যাল মাস্ক কেবল স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বরাদ্দ রেখে নাগরিকদের কাপড়ের তৈরি সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

কাপড়ের তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক সাধারণ সুরক্ষা দিতে পারে। জরুরি প্রয়োজনে (যেমন বাজার করা) বাইরে বের হতে হলে এগুলো ব্যবহার করা যাবে।

২০১৫ সালে সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবরার আহমেদ সাধারণ কাপড়ের মাস্কের কার্যকারিতা নিয়ে একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করেছিলেন।

তিনি জানান, সার্জিক্যাল মাস্কের তুলনায় সাধারণ মাস্ক ব্যবহারকারীরা তুলনামূলকভাবে বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। যেহেতু, ওই পরীক্ষায় প্রত্যেকেই কোনো না কোনো মাস্ক পরে ছিলেন তাই কোনো ধরনের মাস্ক ব্যবহার না করলে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করার চেয়ে বেশি কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’

কয়েকটি গবেষণা বলছে, সার্জিক্যাল বা অন্যান্য উন্নত মাস্কের মতো না হলেও কাপড়ের তৈরি সাধারণ মাস্ক কিছুটা হলেও সুরক্ষা দিতে পারে।

আবরার আহমেদ বলেন, ‘মাস্ক বাহকের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ কমায়। কেউ যদি ভাইরাসটির নীরব বাহক হন, মাস্ক পরে থাকলে তিনি আশেপাশের মানুষের মধ্যে ভাইরাসটি তুলনামূলকভাবে কম ছড়াবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো যেসব দেশে দ্রুতগতিতে করোনা ছড়াচ্ছে সেসব দেশে প্রত্যেকেরই উচিত মাস্ক ব্যবহার করা। কারণ, আমরা জানি অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অজান্তেও ভাইরাসটি ছড়িতে দিতে পারেন।’

সিঙ্গাপুরে প্রতিবার কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের পর সেগুলো সাবান দিয়ে গরম পানিতে অন্তত এক মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। রোদে শুকানোর পর তা আবার ব্যবহার করা যাবে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘মনে রাখবেন, মাস্ক ব্যবহার করুন কিংবা না করুন, আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত হাত ধুতে হবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।’

হংকংয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাস্কের সংকট দেখা যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চীন, জাপান, নেপাল, থাইল্যান্ড ও তুরস্ক থেকে মাস্ক আমদানি করে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করেছে।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেঞ্জামিন কাওলিংয়ের মতে, ‘হাসপাতালের যেসব মাস্ক ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে সাধারণত তিনটি স্তর থাকে। বাইরের স্তর পানি-নিরোধী, মাঝেরটা ফিল্টার ও ভেতরেরটা শোষণকারী উপাদান দিয়ে তৈরি। হংকংয়ে যেসব মাস্ক বাজারে কিনতে পাওয়া যায় সেগুলো এক অথবা দুই স্তরের। এগুলো হয়তো মেডিকেল মাস্কের মতো কার্যকর না। তবে, কিছুটা হলেও ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।’

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ইভান হাং ফ্যান-এনগাই বলেন, ‘সার্জিকাল মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন আছে। হংকং ও চীনের তথ্য অনুযায়ী এটি প্রমাণিত। আমার ধারণা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিডিসি এখন তাদের মত পরিবর্তন করছে কারণ এখন তারা বুঝতে পেরেছে সার্জিকাল মাস্ক কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।’

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *