fbpx
হোম অন্যান্য খাদ্য সংকটে সাধারণ মানুষ; সারাদেশে ত্রাণ নিয়েও দুর্নীতি
খাদ্য সংকটে সাধারণ মানুষ; সারাদেশে ত্রাণ নিয়েও দুর্নীতি

খাদ্য সংকটে সাধারণ মানুষ; সারাদেশে ত্রাণ নিয়েও দুর্নীতি

0

করোনা ভাইরাস দুর্যোগে বাংলাদেশে লকডাউনের মধ্যে কর্মহীন মানুষ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে দুনীতি, অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলা এখনও থামানো যায়নি।

ঘরে থাকা অসহায় মানুষের জন্য এই ভাইরাস চরম বেদনার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। একদিকে যেমন জীবন বাঁচানোর তাগিদে ঘরবন্দী হয়ে থাকা , অন্যদিকে অসহায় মানুষের দুমুঠো খাবার যোগানের পথও বন্ধ। এমনি এক মুহুর্তে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এই দুর্দিনেও অসহায়দের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ নিয়ে চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কয়েক জায়গায় ত্রাণ দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি ইউনিয়নে একজন ডিলার হিসাবে চাল আত্মসাত করার চেষ্টা করেছিলেন, তেমন অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়ে প্রশাসন তার জরিমানাও করেছেন। আরেকজন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে দুর্নীতির দায়ে জেলে গেছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া  বলছিলেন, একটা ইউনিয়নে ডিলারদের জন্য যে বরাদ্দ আছে তার মধ্যে একজনের নাম গাজিউল হক। তার জন্য ৫০০ বস্তা বরাদ্দ ছিল। তিনি ৫০০ বস্তা চালই তুলেছেন। কিন্তু আমরা তার গুদামে গিয়ে ২১২ বস্তা চাল পাই। বাকি চালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিতরণ করেছেন বলে জানান। কিন্তু বিতরণের তালিকা দেখে আমাদের সন্দেহ হয়।

সন্দেহ হওয়ার চাল বিতরণের তালিকা ধরে কয়েকজনের বাসায় গিয়ে কথা বলেন কর্মকর্তারা। সে সময় একজন বলেন, তার নামে যে কার্ড হয়েছে সেটাই তিনি জানেন না। আরেকজন বলেন, এবার চাল আসেনি, টাকা এসেছে। এই বলে ২৫০ টাকা তাকে দিয়েছে। অথচ কার্ডধারিকে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেয়ার কথা ছিল। এসব প্রমাণ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ঐ ডিলারকে এক মাসের জেল দেয়া হয়েছে বলে জানান রাসেল মিয়া।

দু’দিন আগে দক্ষিণ পশ্চিমের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার একটি ইউনিয়নেও একজন ডিলার হিসাবে স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা ১০ টাকা কেজির চাল বাজারে বিক্রি করে ধরা পড়েছেন। ১০ টাকা কেজি দরে একটি পরিবারকে ৩০কেজি করে চাল দেয়ার জন্য ৫০ লাখ মানুষের একটি তালিকা করা হয়েছিল প্রায় ১০ বছর আগে। এত বছরের পুরোনো তালিকা নবায়ন না করার কারণেও সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর বাইরে এখন লকডাউনের কারণে কর্মহীন এবং দরিদ্র প্রতিটি পরিবারের তালিকা করে বিশেষ ত্রাণ হিসাবে ১০ কেজি করে চাল ঘরে ঘরে বিতরণের কার্যক্রমের কথা বলছে সরকার। কিন্তু অনেক মানুষ কোন সাহায্যই পাচ্ছেন না।

শরিয়তপুর জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম থেকে এক নারী বলছিলেন, এখন তাদের কাজ না থাকায় অসহায় পরিস্থিতিতে রয়েছেন। আমার চারটা সন্তান। কিন্তু কোন সাহায্য পাই নাই। করোনার কারণে এখন কোন কাজ নাই। সব বন্ধ। ফলে জীবন চালানো কঠিন হয়ে গেছে বুঝলেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা নঈম ওয়াহারা বলেন, মাঠ পর্যায়ে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এটা বিভিন্নভাবে খবর আমরা পাচ্ছি। আমাদের যে পুরাতন ধাঁচের রিলিফ বিতরণ প্রক্রিয়া আছে, সেটার ওপরই আমরা নির্ভর করছি। সেটা করতে গিয়ে মানুষের ভিড় বাড়ছে এবং যার বেশি প্রয়োজন, তার কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, আমরা সারাদেশে ২৯ লাখ ৭৫ হাজার পরিবারের তালিকা করতে পেরেছি। প্রতি পরিবারে চারজন করে সদস্য ধরা হলে ১কোটি ২০ লাখ লোকের তালিকা হয়েছে। এখনও প্রায় ১কোটি ৮০ লাখ লোক তালিকার বাইরে আছে। একেবারে গ্রামের ওয়ার্ড পর্যায়ে তালিকা তৈরি বেশ কঠিন। সেজন্য কিছুটা সময় লাগছে। তবে একদিকে তালিকা তৈরির কাজ চলছে, একইসাথে ত্রাণ বিতরণও করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে এই তালিকা করে ঘরে ঘরে চাল পৌঁছে দেয়া হচ্ছে এবং এখানে কোন বিশৃঙ্খলা নাই।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরও ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম দুর্নীতি থামানো যাচ্ছেনা। আর ব্যক্তিগতভাবে বা বেসরকারিভাবেও ত্রাণ বিতরণে জনসমাগম করে বিশৃঙ্খলতা চলছে এবং তাতে সামাজিক দূরত্ব ভেঙ্গে পড়ছে।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *