প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছেন খালেদা জিয়ার পরিবার
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতির আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাচ্ছে তার পরিবার। সোমবার বিএনপির একাধিক সূত্র এ তথ্য মানবকণ্ঠকে নিশ্চিত করে বলেন, ঈদের আগে বা পরে শামীম এস্কান্দারসহ পরিবারের কয়েক সদস্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার পথ সুগম করার জন্য অনুমতি দিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হবে। একটি আবেদনপত্রের মাধ্যমে এই অনুরোধটি করা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সকল কাগজপত্র।
এদিকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি না দেয়াসহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দুপুর ১২টায় গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।
অপরদিকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও জামিনের দাবি জানিয়েছে জেএসডির সভাপতি আসম রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।
খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদন পাওয়ার দাফতরিক বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত রবিবার বিকালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার জানিয়ে দেয়, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়া গেল না।
এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করে যে শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছিল, তা শিথিল করে এখন তাকে বিদেশে যেতে দেয়ার সুযোগ নেই।
আইনমন্ত্রীর এ মতামত পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে তার ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদনটি গ্রহণ করতে পারলাম না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘মানবিক দিক’ বিবেচনা করে তাদের নেত্রীকে অনুমতি দেয়ার আহ্বান রেখেছিলেন সরকারের কাছে। আবেদনপত্রটি পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে বিষয়টি ‘ইতিবাচক দৃষ্টিতে’ বিবেচনা করা হবে। আবেদনের ফাইলটি হাতে পাওয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, সাময়িক মুক্তির শর্ত শিথিলের সুযোগ আছে কিনা, তা দেখে তিনি দ্রুতই সিদ্ধান্ত দেবেন। তিনিও বিষয়টি ‘ইতিবাচকভাবে’ দেখছেন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ইতোমধ্যে তিনি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তাকে বিদেশে নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য প্রস্তুতিও এগিয়ে নিয়েছিল তার পরিবার।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। গত বছর মহামারীর? শুরুতে পরিবারের আবেদনে সরকার তার দণ্ড কার্যকারিতা স্থগিত করে সাময়িক মুক্তি দেয়। সে সময় শর্ত দেয়া হয়, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।