পেঁয়াজ সংকটের সুযোগে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা
পেঁয়াজের বাজার নিয়ে অস্থিরতার পর সিন্ডিকেট দমনে কঠোর অবস্থানে সরকার। বাজার কারসাজিতে জড়িতদের খুঁজে বের করতে চলছে নানামুখী তৎপরতা। প্রশাসনের অনুসন্ধানে মিলেছে, পেঁয়াজের বাজারকে ঘিরে দেশের সবচেয়ে বড় এবং রহস্যময় পেপারলেস মার্কেট সিস্টেম।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৯৯ হাজার ১৮৩ টন। আর এসব পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ইনভয়েস মূল্য ধরা হয়েছে ৪৯৬ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। ইনভয়েস অনুসারে সর্বনিম্ন পেঁয়াজের কেজি ৩৪ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা। কিন্তু পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত ঠেকে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা করে পড়েছে। ৫ শতাংশ নষ্টের অজুহাত দেখিয়ে তারা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ নথিপত্রে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানিকারক রয়েছেন তিনশ’র বেশি ব্যবসায়ী। এর মধ্যে চট্টগ্রামে রয়েছেন ৩৬ জন। তবে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের দাবি, কাস্টম কর্মকর্তারাই ট্যারিফ অনুযায়ী সহজে শুল্ক আদায় করতে আন্ডার ইনভয়েস করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের বুকিং রেট বাড়লেও শুল্ক আদায় করা হচ্ছে আগের দর অর্থাৎ মিয়ানমারের ৫০০ মার্কিন ডলার এবং ভারতের ৪৫০ ডলার হিসাবেই। যে কারণে পেঁয়াজের বাজারে এ ধরনের তারতম্য হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী বলেন, টেকনাফে ৫০০ ডলার নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত বাজার মূল্য অনেক বেশি।
পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে খাতুনগঞ্জ থেকে শুরু করে খুচরা বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু পেপারলেস মার্কেট সিস্টেমের কারণে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, অভিযোগগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।