fbpx
হোম আন্তর্জাতিক নির্যাতনে মৃত্যু : মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে উত্তাল ফিলিস্তিন
নির্যাতনে মৃত্যু : মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে উত্তাল ফিলিস্তিন

নির্যাতনে মৃত্যু : মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে উত্তাল ফিলিস্তিন

0

ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক অবস্থায় একজন রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনিদের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গভীর অসন্তোষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।নিজার বানাত নামের এই ফিলিস্তিনিকে তার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী। আটক থাকা অবস্থায় তাকে যে মারাত্মকভাবে পেটানো হয়েছিল, সেরকম অনেক প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। পরে তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শত শত ফিলিস্তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পদত্যাগ দাবি করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন।ফিলিস্তিন শাসকদের নিন্দা করে বিক্ষোভকারীরা ‘শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত করো’ বলে স্লোগান দেন। এক দশক আগে আরব বিশ্বজুড়ে যে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, তখন এই স্লোগানটিই শোনা যেত।রামাল্লায় যখন বিক্ষোভ চলছিল, তখন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাদা পোশাকধারী লোকজন লাঠি ও ইট-পাটকেল দিয়ে ওই বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। রামাল্লা থেকেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ-কর্ম চালায়। এ ঘটনায় ক্ষোভ আরো তীব্র হয়েছে। ভিন্নমতকে দমন করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ বেড়েছে। এ সপ্তাহান্তে আরো বিক্ষোভের আয়োজন করার পরিকল্পনা চলছে।

নিজার বানাতের মৃত্যুর পর জাতিসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যে বিধিনিষেধ দিয়েছে, সুশীল সমাজের কর্মী এবং সংগঠনগুলোকে যে হয়রানি করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।নিজার বানাত কিভাবে মারা গেছেন, তা নিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত সরাসরি কিছু বলেনি।৪৩ বছর বয়স্ক নিজার বানাত ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। এই ভিডিওতে তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত লাভের জন্য দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করেন।তিনি ইসরাইলের সাথে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং ইসরাইলের কাছ থেকে প্রায় মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাওয়া কোভিড টিকা পাওয়ার চুক্তিরও ঘোরতর সমালোচক ছিলেন।

তার মৃত্যুর পর ২৪ জুন যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল, তার পেছনে আছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মে মাসে যে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করায় ক্ষোভ বেড়ে যায়। এই নির্বাচন বাতিলের জন্য আব্বাস অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদের ভোটাধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ইসরাইলকে দায়ী করেছিলেন।তার সমালোচকরা বলছেন, মাহমুদ আব্বাস ভয় পাচ্ছিলেন যে নির্বাচনে তার ফাতাহ পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বী দল হামাসের বিরুদ্ধে পেরে উঠবে না। নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেয়ার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন নিজার বানাত। তিনি একইসাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সাহায্য দেয়া বন্ধ করার জন্য।গত ১৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। গত মে মাসের নির্বাচন বাতিলের পর সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এমন ধারণা দৃঢ় হয়েছে যে আব্বাস ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চাইছেন।নিজার বানাতের মৃত্যুর পর যে বিক্ষোভ দেখা গেছে, তা কোনো রাজনৈতিক দলের আয়োজন করা নয়। বরং এই অসন্তোষেরই স্বতস্ফূর্ত বিস্ফোরণ বলে মনে করা হচ্ছে।রামাল্লায় যে মিছিল হয়েছে, তাতে ফিলিস্তিনিদের বিভিন্ন উপদলের পতাকা দেখা যায়নি। বরং বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে ঘরে বানানো নানা রকম প্ল্যাকার্ড আর বানাতের ছবি।

ফাতাহ-পন্থী একটি সংবাদপত্র আল-আইয়ামের একজন কলাম লেখক আবদেল মাজিদ সোয়াইলেম লিখেছেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই বিক্ষোভকে বিদেশী এজেন্ডার সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করছে। তারা কোনো ধরনের দুর্বলতা, দুর্নীতি বা অবহেলার কথা স্বীকার করছে না। তারা সব বিক্ষোভের পেছনেই কোনো ফন্দি বা ষড়যন্ত্র আছে বলে দাবি করছে। প্রকৃত সঙ্কট হচ্ছে যে কেউই দায়িত্ব নিতে চাইছে না।নিজার বানাতের মৃত্যুর তদন্ত করতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তার রিপোর্ট এখনো প্রকাশ করা হয়নি। ফিলিস্তিনি বিচারমন্ত্রী কেবল এটুকুই বলেছেন, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই কমিটি তাদের রিপোর্ট বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলেছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে নিজার বানাতের পরিবার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছে।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *