তিন তালাক বিল নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে দেওবন্দের চিঠি
ভারতের রাজ্যসভায় সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত তিন তালাক বিলের বিরোধিতা করছে দেশটির অধিকাংশ মুসলিম সংগঠন।
তিন তালাক বিলকে ইসলামী শরিয়তের ওপর হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দের প্রিন্সিপাল মুফতি আবুল কাসেম নোমানী। পাশাপাশি বিলটিতে সম্মতি দেয়ার পূর্বে বিষয়টি নিয়ে ইসলামী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলতে প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিরোধীদের সব মতামত উপেক্ষা করে অনেকটা গায়ের জোরেই ভারতের রাজ্যসভায় মঙ্গলবার বিতর্কিত তিন তালাক বিল পাস করেছে মোদি সরকার।এর প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দারুল উলুম দেওবন্দ। এ বিলের ওপর প্রশ্ন রেখে দেওবন্দের প্রিন্সিপাল বলেন, মোদি সরকার তিন তালাক বিল পাস করে মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের অধিকার হরণ করেছে। তিনি বলেন, তিন তালাক বিল মোদি সরকারের শরিয়তের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।দেশের আইনে সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা আছে। কিন্তু বিজেপি সরকার মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বারবার আক্রমণ করে যাচ্ছে।
পাসকৃত তিন তালাক বিলের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুফতি আবুল কাসেম নোমানী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার মুসলমানদের ধর্মীয় ব্যাপারে এভাবে হস্তক্ষেপ না করে ভারতের আলেমদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে মীমাংসা করতে পারত।
এদিকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পাঠানো চিঠিতে দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,বিতর্কিত বিলটি ক্ষমতাসীন সরকার গায়ের জোরে পাস করেছে।এতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মতামতের কোনো তোয়াক্কাই করা হয়নি। তাই বিলটিতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর না করে আবার রাজ্যসভায় ফেরত পাঠানোর আবেদন জানিয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সংসদে এটিই প্রথম বিল। আগের বিলটি রাজ্যসভায় আটকে যায়। ফলে ষষ্ঠদশ লোকসভা ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বাতিল হয়ে যায়। বিরোধীরা এ বিলকে পক্ষপাতমূলক বলে অভিযোগ করেছেন। মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারের এমন হস্তক্ষেপে অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন ভারতের দ্বিতীয় সংখ্যাঘরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী।