ডা. জাফরুল্লাহকে নিয়ে যা বললেন তার চিকিৎসক
দীর্ঘদিনের কিডনি রোগী, ডায়ালাইসিস করাতে হয়। রয়েছে ডায়াবেটিসও। এত রোগ থাকা সত্ত্বেও এই বয়সে এই চিকিৎসকের করোনা থেকে মুক্ত হওয়াটা আশ্চর্যই বটে। ডা. জাফরুল্লাহর করোনা জয় করার নেপথ্য কারণ জানালেন তার চিকিৎসক ডা. মামুন মোস্তাফি।
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহর চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা নেগেটিভ হলেও ফুসফুসের ৮০ শতাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামের একজন মানুষ ও কৃষক যে সেবা নিতে পারেন না, তিনি তা গ্রহণ করেন না।
তিনি বলেন, ওনার করোনা বিজয়ী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় হলো তার মনোবল। আমরা ঢাকা মেডিকেলে তার জন্য কেবিন প্রস্তুত করেছিলাম। কিন্তু তিনি বলে দিয়েছেন, ওখানে থেকে আমার গ্রামের একজন মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবে না, আমিও নেব না। গ্রামের কোনো মানুষের এখানে থেকে মৃত্যু হলে আমারও হবে।
মামুন মোস্তাফি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ আমার ৩৫ বছরের চিকিৎসা জীবনে সবচেয়ে ডিফিকাল্ট পেশেন্ট। আমি তার চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেছি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা হলে চিকিৎসা দেয়ার মতো হাসপাতাল বাংলাদেশে নেই।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে ডা. জাফরুল্লাহর একাত্মবোধ তা আমি আর কারও মাঝে দেখিনি। তার প্রতি দেশের মানুষের যে ভালোবাসা ছিল, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলে দেখা যায়। প্রতিটা মানুষের দোয়া ছিল– আল্লাহ তুমি এই মানুষটাকে বাঁচিয়ে রাখো।
জাফরুল্লাহর করোনা রোগ থেকে মুক্তি হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মোকাবেলায় সরকারের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। সরকার একটি অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সম্ভবত আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে ভাগ্যবান করোনা রোগী।সবাইকে জানাই আমার এবং গণস্বাস্থ্য পরিবারের অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা আমার দ্রুত রোগ মুক্তিতে সহায়ক হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, এখনও মূল ধাক্কা আসেনি। আসবে এ মাসের পরে। যখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে এই মহামারী।