ডাস্টবিনের পঁচা খাবারে মেটে ক্ষুধার জ্বালা !
কেউ না খেতে পেয়ে ক্ষুধায় আর্তনাদ করে, কেউবা বিলাসিতা করে খাবার নষ্ট করে। কারও নষ্ট খাবার কিংবা অবশিষ্ট খাবার যখন ফেলে দেয়া হয়, এই পঁচা খাবারেই বাঁচে অনেকের জীবন।
পঁচা বা বাসি খাবার বড় কথা নয়, একমুঠো খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করতে পারলেই কাশেম, জসিম, রহিমদের জীবন নামক যন্ত্রণাটা চলে। সমাজ, ভবিষ্যৎ, ব্যক্তিত্ব—কোনো কিছুরই জাগ্রত বোধ নেই তাদের মধ্যে। একবেলা খাবার খেয়ে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখাই যেন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
সারাদিন আশায় থাকেন, কখন ডাস্টবিনে কেউ খাবার ফেলবে। ওই ডাস্টবিনে বাসি, পঁচা খাবার পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতই খাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। কেননা, সে খাবার আবার হাতছাড়া হওয়ার ভয় থাকে তাদের মধ্যে। সিটি করপোরেশন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ময়লা পরিষ্কার করার সময় এই খাবার (ময়লা) ট্রাকে বা ভ্যানে তুলে নিয়ে যাবেন। সেই ভয়েও দ্রুত খেয়ে নেন পথের ধারের অসহায় মানুষগুলো।
অনেক সময় দেখা যায়, কাক আর বেওয়ারিশ কুকুরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ময়লা আবর্জনার মধ্যে বসে পঁচা খাবার খাচ্ছেন তারা। তাও একবেলা খেলে অন্য বেলার খাবার জোটে না। এই খাবারের জন্য আবার অনেকেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। তাদের নিদিষ্ট কোনো ঘর বাড়ি নেই, রাস্তার ধারেই থাকেন।
সদরঘাট ফুটওভার ব্রিজের নিচে ডাস্টবিন রাখা। এক অনুষ্ঠান শেষে খাবারের এঁটো অংশ ফেলার পরই সেগুলো সংগ্রহ করতে দেখা গেছে জসিম নামের এক ছেলেকে। তার বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হবে। এগুলো দিয়ে কী করবা? এমন প্রশ্নের জবাবে জসিম বলেন, স্যার ডাস্টবিন থেকে ভাঙ্গারি ও কাগজ টুকাই আর কিছু পেলে খাই। সব সময় খাই না। আজকে বেশি খিদা লাগছে তাই নিয়ে যাচ্ছি।
হাইকোর্ট মাজারের সামনের রাস্তায় বসে খিঁচুড়ি খাচ্ছেন রহিম। তিনি বলেন, ওইখান থেকে আনছি। অন্যরা খাওয়ার পরে যতটুকু বাটিতে ছিল, তা চেটেপুটে খাচ্ছেন রহিম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের গেটে বসে খাবার খাচ্ছেন ভারসাম্যহীন কাশেম। তাকে জিজ্ঞাসা করার সঙ্গে সঙ্গে পাশের লোক বলেন, মামা পাগল লোক। একজন লোক খেয়ে রেখে গেছে, তার মধ্যেই পাশের হোটেল থেকে কিছু ভাত আর মাছ দিয়ে তাকে খেতে দিল। ওনি কারো কাছে থেকে চেয়ে খায় না।