চীনে মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের প্রমাণ সংগ্রহ…
যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত একটি আনুষ্ঠানিক আইনগত মতামতে চীনের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় উইঘুরদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকারি বাহিনীর চালানো পরিকল্পিত গণহত্যার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল এই আইনগত মতামত দিয়েছে। আজ সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশেষজ্ঞদের আইনগত মতামতে এই বলে উপসংহার টানা হয়েছে যে, উইঘুরদের ধ্বংস করার চেষ্টায় রয়েছে চীন। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় তৎপরতার প্রমাণও রয়েছে। উইঘুরদের ধ্বংসের লক্ষ্যে চীন সরকার যেসব কর্মকাণ্ড করছে, তার মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু এই মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের আটকে রাখার মাধ্যমে তাদের ইচ্ছাকৃত ক্ষতি করার প্রবণতা, গর্ভপাত-বন্ধ্যাকরণসহ নানাভাবে নারীদের সন্তান জন্মদান রোধের ব্যবস্থা, উইঘুর শিশুদের তাদের সম্প্রদায় থেকে জোর করে স্থানান্তর ইত্যাদি।
আইনগত মতামতে বলা হয়, এ বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং নিজেই এই মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী। মতামতে আরো বলা হয়, উইঘুরদের নিশানা করার ক্ষেত্রে শি জিন পিং-এর ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হওয়ার বিষয়টি তার বিরুদ্ধে গণহত্যার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ থাকার অভিযোগকে সমর্থন করে।
একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল এই আইনগত মতামত দিয়েছে। বিশেষজ্ঞ দলটি তথ্য-প্রমাণ ও সংশ্লিষ্ট আইন যাচাই-বাছাই করেছে। যাচাই-বাছাই শেষে তারা এ ব্যাপারে উপসংহার টেনেছে। ১০০ পৃষ্ঠার এই আইনগত মতামত লিখেছেন লন্ডনের এসেক্স কোর্ট চেম্বারের একাধিক জ্যেষ্ঠ ব্যারিস্টার। আইনগত মতামতের উদ্যোক্তা গ্লোবাল লিগ্যাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক, ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস ও উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট।
চীনের জিনজিয়ানে দেশটির কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্যে এই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক আইনগত পর্যালোচনা হলো। আইনগত এই মতামতের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। অর্থাৎ এই আইনগত মতামত কোনো আদালতের রায় নয়। তবে এই আইনগত মতামতের গুরুত্ব রয়েছে। কারণ, এই মূল্যায়ন ভবিষ্যতে কোনো আইনগত পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
তবে চীন বরাবরই জিনজিয়ানে উইঘুরদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। লন্ডনে চীনা দূতাবাস বলেছে, বেইজিংবিরোধী পশ্চিমা শক্তি জিনজিয়ান নিয়ে মিথ্যা ছড়াচ্ছে। জিনজিয়ান নিয়ে অভিযোগকে ‘শতাব্দীর মিথ্যা’ বলেও অভিহিত করেছে লন্ডনে চীনা দূতাবাস।
সূত্র: বিবিসি।