fbpx
হোম আন্তর্জাতিক চীনা পণ্য বর্জনের বিক্ষোভে দোটানায় ভারত
চীনা পণ্য বর্জনের বিক্ষোভে দোটানায় ভারত

চীনা পণ্য বর্জনের বিক্ষোভে দোটানায় ভারত

0
চীনের এক হাজারেরও বেশি পণ্যের একটা তালিকা বানিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক। এখন সেই তালিকা নিয়ে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলছে তারা। জানা যায়, ভারতে চীনা পণ্যের কোনোটাই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নয়। খেলনা, প্লাস্টিক, স্টিল, ইলেকট্রনিক্স এবং গাড়ির কিছু যন্ত্রাংশ।
মন্ত্রক গোষ্ঠী চায়, তালিকায় থাকা জিনিসগুলো আমদানির ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্কের বোঝা চাপাতে। উদ্দেশ্য, লাদাখে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষের পর চীনা জিনিসের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং দেশের শিল্পগুলোকে চাঙ্গা করা। সে জন্যই দেশের কোম্পানির সঙ্গে কথা চলছে তারা। সরকার ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ এবং রিনিউয়েবল এনার্জির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়তি কাস্টমস শুল্ক বসানোর কথা ভাবছে।

কিন্তু চীনা জিনিস থামাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে সরকার। কারণ, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চীনা জিনিসের ওপর নির্ভরতা এতটাই বেশি যে, সেখানে বিধিনিযেধ চাপালে দেশের লোকই বিপাকে পড়বেন। কারণ, ওই জিনিসগুলির দাম অনেকটাই বেড়ে যাবে। এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আছে ইলেকট্রনিক্স, গাড়ির যন্ত্রাংশ, ওষুধ, ক্রীড়া সরঞ্জাম, টেলিকম ইত্যাদি

গত আর্থিক বছরে চীন থেকে সাত হাজার কোটি ডলারের জিনিস আমদানি করেছিল ভারত। রপ্তানি করেছিল ১,৬৭০ কোটি ডলারের জিনিস। ফলে আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে বিপুল ফারাক রয়েছে। অন্য কোনও দেশের সঙ্গে ফারাকটা এত বেশি নেই।  এর মূল কারণ হলো, অনেকগুলি ক্ষেত্রে চীনা জিনিসের ওপর নির্ভরতা খুবই বেশি।

ওষুধের ক্ষেত্রে ছোট একটা উদাহরণ প্রয়োগে দেখা যায়, ভারতের ৭০ শতাংশ প্যারাসিটামল চীন থেকে আসে। জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেতে হয়। এই অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্যও চীনের ওপর নির্ভরশীল ভারত। তাছাড়া থার্মোমিটার থেকে শুরু করে ওষুধ ও মেডিকেল যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রেও ভারতের চীন-নির্ভরতা প্রবল।

ওষুধের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, মাঝখানে একবার দূষণের কারণে, চীন কিছুদিন কারখানা বন্ধ রেখেছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে ওষুধের দাম বেড়ে গিয়েছিল। ওষুধ চীনের থেকে না নিলে অন্য দেশ থেকে নিতে হবে। অভিজ্ঞতা বলছে, তখন দাম বাড়তে বাধ্য। কারণ, চীনের জিনিস দামে অনেক কম। মানেও ভালো। তাই তারা এই ভাবে ওষুধের ক্ষেত্রে ঢুকে পড়েছে।

সুমিতবাবুর মতে, বাজার খুঁজতে খুব দেরি হয় না। আসল কাজটা তো উৎপাদন। দামে সস্তা, মানে ভালো জিনিস যদি দেশে বানানো যায়, তা হলে তো কথাই নেই। তখন কেন আমরা চীনের জিনিস নেব? সেটা না করে চীনের জিনিস বন্ধ করলে, ধাক্কাটা লাগবে সাধারণ মানুষের।

আসলে অর্থনীতির গণিতটা আলাদা। আর বাজার অর্থনীতির পাঠই হলো, ক্রেতা যেখান থেকে কম দামে জিনিস পাবে, সেখান থেকে কিনবে। এই একই কথা খাটে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, টিভির মতো জিনিসের ক্ষেত্রেও। সেখানেও চীনের রমরমা।

দিল্লিতে সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হলো সদর বাজার। সেখানে খেলনার দোকান ভরা চীনা জিনিসে। দোকানদারদের বক্তব্য, চীনা খেলনার বিকল্প তাঁদের দিতে হবে। সেই দামে। তা হলেই চীনা জিনিস ছেড়ে দেশের খেলনায় দোকান ভরাবেন তাঁরা। এমনকি ভারতে সাজাবার জন্য, বাড়িতে রেখে পুজোর জন্য দেবদেবীর মূর্তিও আসছে চীন থেকে। বুদ্ধ থেকে বজরঙ্গবলী সবই মেড ইন চায়না।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, চীনা জিনিস বয়কটের স্লোগান এই সংঘর্ষের আবহে উঠতেই পারে, কিন্তু তা আদৌ কার্যকর করা যাবে কি না তাতে সন্দেহ আছে।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *