খুলনার পতিতালয়ের শিশুরাও স্কুলে যাবে, থাকবে আবাসিক হোস্টেলে !
এখন থেকে খুলনার দাকোপের বানিশান্তা পতিতালয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের আর অপরাধ কর্মে জড়িয়ে পড়তে হবে না। কারণ, খুলনা জেলা প্রশাসন এসব অসহায় শিশুদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। পতিতাপল্লীতে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও মায়েদের থেকে আলাদা রাখতে আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে মায়েরা শিশুদের সাথে দেখা করতে পারবেন। কিন্তু এসব শিশুরা কখনোই পতিতাপল্লীতে যেতে পারবে না। পতিতালয়ের পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবনব্যবস্থা পরিবর্তন ও তাদেরকে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে এ উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসনকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘যৌনপল্লীর শিশুদেরকে আবাসিক শিক্ষা ও পনুর্বাসনের উদ্দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ ও হোস্টেল নির্মাণ’ কাজের উদ্বোধন করা হয়। এতে জুম অ্যাপের মাধ্যমে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, এমপি।
জেলা প্রশাসক বলেন, এরই মধ্যে ৬৪টি শিশুকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি ও আবাসন ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে খুশি তাদের বাবা-মায়েরাও। তারা তাদের সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে এ পদক্ষেপ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
জানা যায়, প্রাথমিকে ভর্তি হওয়া ৬৪ জন শিশুর জন্য বানিশান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সেই সাথে বিদ্যালয়ের পাশে আবাসনের জন্য প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাইস্কুলে পড়া আরো ৪৩ জন শিশুর জন্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। আবাসিক হোস্টেলের সুস্থ পরিবেশে এসব শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। এসব শিশুরা শিক্ষিত হলে তারা আর কখনোই মায়ের পেশায় ফিরে যাবে না বলে তিনি মনে করেন।