fbpx
হোম আন্তর্জাতিক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে তুলকালাম যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়েপোলিস
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে তুলকালাম যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়েপোলিস

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে তুলকালাম যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়েপোলিস

0

পুলিশ হেফাজতে যুক্তরাষ্ট্রে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর জেরে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ এবং অগ্নিসংযোগে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়েপোলিস শহর।

তৃতীয় দিনের বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা একটি থানায় ও দুটি ভবনে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মিনিয়েপোলিস ও পার্শ্ববর্তী সেইন্ট পল শহরে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে বিক্ষোভের মুখে হত্যার ঘটনায় জড়িত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

বিশ্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় সব সময়ই স্বোচ্চার যুক্তরাষ্ট্র। সেই যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়েপোলিস শহরে গত সোমবার পুলিশ হেফাজতে মারা যান কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড। তিনি একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
এই ঘটনার একটি ভিডিও’তে দেখা যায়, এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু দিয়ে তাকে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছেন। সে সময় ফ্লয়েড বলতে থাকেন, প্লিজ, আমি শ্বাস নিতে পারছি না, আমাকে মারবেন না। এক পথচারী সে সময় ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রাথমিক ভাষ্যে পুলিশ জানায়, ফ্লয়েডের গাড়িতে জাল নোট থাকার খবর পেয়ে সোমবার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তারা ফ্লয়েডকে গাড়ি থেকে নেমে সরে যেতে বললে তিনি কর্মকর্তাদেরকে বাধা দেন এবং গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিডিও’তে তেমন কিছু দেখা যায়নি। এ ঘটনার তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- এফবিআই।

স্থানীয়, অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চলছে জানিয়ে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করারও আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

মিনিয়াপোলিসের পুলিশপ্রধান মেদারিয়া আরাদোনদো তার বিভাগের পক্ষ থেকে ফ্লয়িডের পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে সময় চেয়েছেন অ্যাটর্নি মাইক ফ্রিম্যান। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস বলেছে, তারা এখনো তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।

এরই মধ্যে ফ্লয়েডের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গতকাল শুক্রবার আটক করা হয়েছে। সে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। হেনেপিন কাউন্টি অ্যাটর্নি মাইক ফ্রিম্যান বলেছেন, কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে হত্যার অভিযোগ আনার ঘটনা এটিই প্রথম।

এদিকে এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক হতে পারে না। আমি ভিডিও দেখেছি। ওই দৃশ্য আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এখনো লাখ লাখ মানুষকে বর্ণের কারণে নিগৃহিত হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ভালো হতে হবে। ফ্লয়েডের মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাশেলেত। তিনি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন ও পুলিশকে সংযত আচরণের আহবান জানিয়েছেন।

ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে সংখ্যালঘু বর্ণ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পুলিশের নৃশংসতা আবার সামনে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে ২০১৯ সালে মারা গেছে এক হাজারের বেশি মানুষ। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, পুলিশের গুলিতে নিহতদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান। ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার চালানো জরিপে দাবি করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিনগুণ বেশি মারা যায় কৃষ্ণাঙ্গরা।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *