fbpx
হোম আন্তর্জাতিক করোনা প্রতিরোধে ভিয়েতনামের কীর্তিগাঁথা
করোনা প্রতিরোধে ভিয়েতনামের কীর্তিগাঁথা

করোনা প্রতিরোধে ভিয়েতনামের কীর্তিগাঁথা

0

করোনার বিস্তার রোধে ভিয়েতনাম সুনাম কুড়িয়েছে। লকডাউনের নীতিতে ভিয়েতনাম সময়ের কাজ যথাসময়ে করেছে। করোনা আক্রান্ত সব দেশের শাসকরাই লকডাউন করেছেন, কিন্তু বড্ড দেরি করে।  ভিয়েতনাম শুরু থেকে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ফল পেয়েছে অসাধারণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার দেওয়া তথ্যমতে, ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসে কোনো ব্যক্তি এখন পর্যন্ত মারা যায়নি। যেখানে এর প্রতিবেশী চীনসহ এশিয়ার দেশগুলোয় করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু চিকিৎসক, সাধারণ মানুষ ও সরকারগুলো ভাবিয়ে তুলেছে, সেখানে ভিয়েতনাম কী করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে রেখেছে এবং আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু শূন্যের কোঠায় ধরে রেখেছে, সেটাই আশ্চর্যের।

গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ভিয়েতনাম সরকারিভাবে স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ ও রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করার যে কর্মসূচি বহুদিন ধরে চর্চা করে আসছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সেটি বড় ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। আর যখন করোনাভাইরাস বা ‘কোভিড–১৯’ দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়েনি, তার আগেই ভিয়েতনাম গোটা দেশটাই লকডাউন করে দিয়েছে। এতে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়েছে।

চীনের উহান থেকে দেশে ফেরা ৬৬ বছর বয়সী এক ভিয়েতনামী প্রথম করোনাভাইরাসে শনাক্ত হন। আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ জানুয়ারি প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর প্রকাশ করে ভিয়েতনাম সরকার। ওই দিন থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘কোভিড–১৯’ রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৪ জনে। এর মধ্যে ২ জন চীনা নাগরিক ছাড়া বাকি সবাই ভিয়েতনামী।

ব্যাপক আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে তখনই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যাপক আকারে প্রচার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, কী করলে সুস্থ থাকবে, এটাই ছিল প্রচারের মূল্য বক্তব্য। এসবের পাশাপাশি দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে খুঁজে বের করে পরীক্ষা করেছে।

তবে গত ২ মার্চ সর্বনাশটা ঘটায় দেশটির একজন প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী। ইউরোপের তিনটি দেশ ঘুরে ওই ব্যবসায়ী ভিয়েতনামের হ্যানয় বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কর্মচারীদের পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়েন দেশে। বিমানবন্দরের পরীক্ষায় ফাঁকি দিলেও ভিয়েতনামের পুলিশ তাঁকে ঠিকই আটক করে। এরপর জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত।

এরপর ভিয়েতনাম সরকার একটা বড় পদক্ষেপ নেয়। সেটি হলো, ওই নারী যে বিমানে এসেছিলেন, তার সব যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তিনি যে রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই রাস্তা জীবাণুমুক্ত করা হয়, সেই পথের ধারে বাস করা প্রত্যেককে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এত সব করার পরও আক্রান্তের সংখ্যা ১৭–তে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি—সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৯ জনে।

ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করে, যদি ইউরোপফেরত নারী যাত্রী বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফাঁকি না দিতেন, তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ত না। কারণ, তিনি যেসব স্থানে গেছেন, সেখানের সবাইকে পরীক্ষার মধ্যে আনলেও সবকিছু ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।

তবে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের তুলনায় ভিয়েতনাম এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যা করেছে, তা সারা দুনিয়ার জন্য অনুকরণীয়।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
16

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *