fbpx
হোম গণমাধ্যম অনলাইন কম্পিউটার-কোডিং নিয়ে পড়ালেখা না করেও নিজ জেলার অ্যাপ বানালেন সমাজকর্মের ফরিদ !
কম্পিউটার-কোডিং নিয়ে পড়ালেখা না করেও নিজ জেলার অ্যাপ বানালেন সমাজকর্মের ফরিদ !

কম্পিউটার-কোডিং নিয়ে পড়ালেখা না করেও নিজ জেলার অ্যাপ বানালেন সমাজকর্মের ফরিদ !

0

সমাজকর্মে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনের পর একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পেছনে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, কয়েকমাস পূর্বে মরণঘাতী ক্যান্সারে বাবা হারানোর পর আচমকা পরিবারের হাল ধরতে হয় তাকেই। বিয়ে করেছেন এক রক্ষণশীল পরিবারের কওমী মাদ্রাসায় পড়ুয়া মার্জিত পর্দাশীল তরুণীকে। এতসব ব্যস্ততা ও পিছুটানের মধ্যেও মনের মধ্যে তিনি লালন করতেন নিজ জেলার মানুষদের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী কোনো অবদান রাখবেন। তার মরহুম পিতাও নিজ গ্রামের মানুষদের কাছে পরোপকারী সাদা মনের মানুষ হিসেবে বেশ প্রসিদ্ধ। তাই নিজ জেলার মানুষদের জন্য কিছু করার মাধ্যমে তার মরহুম পিতাকেও গৌরবান্বিত করার প্রয়াস নিয়ে জেলার আদ্যোপান্ত নিয়ে লাগাতার সন্ধান চালাতে থাকলেন। এরপর রাজধানীর একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাংবাদিকতা পেশায় কর্মরত দীর্ঘদিনের সহপাঠী ও সবচেয়ে কাছের বন্ধুর কাছে তার মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন। সাংবাদিক বন্ধুর কাছে পরামর্শ নিয়ে চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে কঠোর অধ্যাবসায় আর ধৈর্যের সঙ্গে অসাধারণ একটি অ্যাপ বানিয়ে ছোট্ট একটি প্ল্যাটফর্মে একদম গোছালোভাবে জড়ো করলেন নিজের পুরো জেলাকে। বর্তমানে এই জেলার সমস্ত মানুষের জন্য একটি তথ্যবহুল ও আবশ্যিক প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যমে পরিণত হয়েছে স্বপ্নবাজ এই যুবকের নয়া আবিষ্কার।

এতক্ষণ ধরে যার সম্পর্কে বলছি তিনি বাংলাদেশের মাগুরা জেলার একটি পল্লীগ্রাম থেকে উঠে আসা সৃষ্টিশীল চিন্তাধারার সম্ভাবনাময় তরুণ মো. ফরিদুর রহমান। জেলার আবালপুর গ্রামের জনাব মফিজুর রহমান (মোহন) মোল্লার ছোট ছেলে তিনি। তার টানা পরিশ্রমের ফসল ‘মাগুরা অনলাইন সেবা’ নামের অ্যাপটি। এখন থেকে এই অ্যাপের মাধ্যমে মাগুরা জেলার গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য সব তথ্য মুহূর্তেই হাতের মুঠোয় গোছালোভাবে পেয়ে যাবে অ্যাপের ব্যবহারকারীরা। কম্পিউটার, কোডিং কিংবা সফ্টওয়্যার বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি অর্জন না করেও শুধুমাত্র একটা শর্টকোর্স করে, অনলাইন ঘেঁটে এবং টিউটোরিয়াল দেখে লাগাতার অধ্যাবসায় ও কঠোর পরিশ্রম করে এতো কম বয়সে এবং অল্প সময়ে এমন সময়োপযোগী অ্যাপ উপহার দিয়ে নিজ জেলার মানুষদের কাছে তিনি এখন জননন্দিত এক তরুণ। পাশাপাশি দিনকে দিন তিনি অর্জন করছেন জেলার পরিচিত অপরিচিত সকল মানুষের প্রাণবন্ত সমর্থন এবং ভালোবাসা। তার তৈরি করা অ্যাপ ইতোমধ্যে অর্জন করেছে জেলার সকল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা এবং দিনকে দিন বাড়ছে এই অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা।

এ বিষয়ে তাকে পরামর্শদাতা সেই সাংবাদিক বন্ধু- মোহনা টেলিভিশনের ন্যাশনাল ডেস্কের নিউজরুম এডিটর ও অনলাইন টেলিভিশন চেঞ্জ টিভি’র সিনিয়র রিপোর্টার পলাশ খাঁন বলেন, ফরিদুর রহমান তার খুবই প্রিয় একজন বন্ধু এবং মেধাবী সহপাঠী। ছাত্রজীবন থেকেই ফরিদের মনে নিজ জেলার মানুষদের জন্য কিছু একটা করার যে প্রবল ইচ্ছা সেটার ব্যাপকতা দেখেই ফরিদুর রহমানকে অ্যাপস্ তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দেন পলাশ খাঁন। বন্ধুর প্রতিভা নিয়ে তার যে বিশ্বাস ছিলো সেটা খুব দ্রুতই সত্য প্রমাণ করতে পেরেছেন ফরিদ। তার মতো এমন গুণী বন্ধু পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করেন পলাশ খাঁন।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে অ্যাপের তৈরিকর্তা ও উন্নয়নকারী ফরিদুর রহমান জানান, তিনি যখন অ্যাপ বানানোর লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন তখন তার একটাই পরিকল্পনা ছিলো যে- তিনি তার জন্মস্থান ও নিজ জেলার জন্য এমন কিছু করবেন যাতে জেলার সকল মানুষ ঘরে বসেই সেবা পেতে পারে। সেই স্বপ্নের আলোকেই অ্যাপটি তৈরি করা। এখানে মাগুরার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ৩০টি বিভাগে বিভক্ত করে তথ্যগুলো সাজানো হয়েছে। অ্যাপটিতে যেসকল সেবা রয়েছে তন্মধ্যে- হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, থানা, ফায়ার সার্ভিস, সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল পরীক্ষার রেজাল্ট, মাগুরা জেলার ট্রেইনিং সেন্টার, ব্যাংক, বিদ্যুৎ অফিস, ব্লাড ব্যাংক, কুরিয়ার সার্ভিস, হেল্প কেয়ার, জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য বৃত্তান্ত, পাসপোর্ট, রেন্ট-এ-কার, হাট বাজার, ব্র্যান্ড শো-রুম, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান, শপিং মল, অনলাইন নিউজ, টেলিকম সার্ভিস, ফার্মেসি, বুক সেন্টার, বাস কাউন্টার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

সাড়া জাগানো এই অ্যাপটি ইনস্টলের জন্য গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে বাংলায় ‘মাগুরা অনলাইন সেবা’ লিখে সার্চ করলে সহজেই পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এই মেধাবী তরুণ বাংলাদেশ, ভারতসহ পুরো বিশ্বের বাঙালি মুসলমানদের হাতের মুঠোয় পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বাণী এবং ইসলামের বহু আমল, বিধি-নিষেধ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক গ্রন্থ বিনামূল্যে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে নতুন একটি অ্যাপ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে তার পরবর্তী অবদান পুরো বাঙালি মুসলিমানদের ধর্মীয় এবং আদর্শিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
14

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *