উপজেলা ও পৌর বিএনপিতে পদ পেয়েছেন দুই মৃত নেতা
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নবগঠিত উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের জায়গা না হলেও পদ পেয়েছেন দুই মৃত নেতা।
অভিযোগ উঠেছে ব্যাপক আত্মীয়করণের। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা নবগঠিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার মাধ্যমে তা বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় তমালতলা বাজারে বুধবার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা নয়ন। সম্মেলনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন বাগাতিপাড়া পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেনকে আহ্বায়ক ও হাফিজুর রহমানকে সদস্য সচিব করে যে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটিতে মৃত ব্যক্তি আজিজুল হককে ২৫ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। এছাড়া জামাল হোসেনকে আহ্বায়ক ও মাইনুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে গঠিত পৌর কমিটিতে ৩১ নম্বর ক্রমিকে থাকা আহাদ আলী মৃত, তবুও তাকে পদ দেওয়া হয়েছে। আজিজুল হকের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান জানান, তার ভাই ১২ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন। অন্যদিকে আহাদ আলীর ছেলে মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, তার বাবা ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর মারা গেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ পদে অসুস্থ, নেশাখোর, অরাজনৈতিক ব্যক্তি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যকারী, ঢাকায় চাকরিরত এবং আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আত্মীয়-স্বজনকে স্থান দেওয়া হলেও দলের ত্যাগী নেতাদের জায়গা দেওয়া হয়নি।
যেসব নেতা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহাসচিবসহ নেতাদের কাছে কমিটিতে থাকার জন্য আবেদন করেছেন তাদের কোনো পদ দেওয়া হয়নি। উপজেলা আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেনের দলে নিষ্ক্রিয় ভাই জামাল হোসেনকে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে। সদস্য সচিব করা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে পঙ্গু মাইনুল ইসলামকে। ত্যাগীদের বাদ দিয়ে দুই কমিটিতে মা ও ছেলেকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। যার মধ্যে মা হোসনে আরা হয়েছেন পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। আর সেই হোসনে আরার ছেলে হাবিবুর রহমান হয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। উপজেলা বিএনপির সব অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠনের সময়ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে উপজেলা আহ্বায়ক তার শ্যালক, ভাই ও ভাতিজাসহ আত্মীয়দের দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করেছেন। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো মনগড়া তালিকা পাঠিয়ে এখন বিতর্কিত কমিটির জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেই মিথ্যা দায়ী করছেন। এ কমিটি বাতিল করে ত্যাগী, যোগ্য নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি করার জন্য তারা দাবি জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন সদ্যবিলুপ্ত কমিটির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক আনসার আলী সরকার ও নাছির উদ্দিন, সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতা কামরুল ইসলাম ও আবু সাঈদ রাষ্ট্র, বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন ও সদর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাজদার হোসেন।
নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আমিনুল হক যুগান্তরকে বলেছেন, স্থানীয় নেতারা যে তালিকা পাঠিয়েছেন সেই অনুযায়ীই আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনেকদিন আগে পাঠানো তালিকা তাই কোনো ভুল-ত্রুটি হলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার সময় ভুলগুলো সংশোধন করে দেওয়া হবে। ৩০ অক্টোবর বাগাতিপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির উভয়টিতে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি।