ইসরায়েল-ফিলিস্তিন স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ক্ষীণ যে কারণে…
টানা ১১ দিন ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিকে দুপক্ষই বিজয় দাবি করছে। গাজায় সড়কে সড়কে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়েছেন নিপীড়িত ফিলিস্তিনিরা। তারা যুদ্ধবিরতিকে ঈদের দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
দুপক্ষের তরফ থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও তা কতদিন টিকে থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সাবেক দূত ডেনিস রোস।
তিনি বিবিসিকে বলেছেন, এই ধরনের যুদ্ধবিরতি স্বল্প সময়ের জন্য শান্তি আনতে পারবে হয়ত। যতক্ষণ পর্যন্ত গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের হাতে রকেট থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্থায়ী শান্তি সুদূরপরাহত।
তার কথার প্রতিধ্বনি পাওয়ার কথাও জানিয়েছে বিবিসি। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজা থেকে রকেট হামলার খবর দিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে ইসরাইলির বিমান হামলার খবর।
এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়াকে নিজেদের ‘বিজয়’ হিসেবে দেখছে হামাস। দলটির এক নেতাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, এটা ফিলিস্তিনি জনগণের ‘বিজয়’ এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘পরাজয়’।
হামাস নেতারা এটাও বলেছেন, ঘোষণা এলেও যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুটিনাটি চূড়ান্ত না হওয়া অবধি তারা সতর্ক অবস্থায় থাকবেন। ফিলিস্তিনিদের বিজয় উল্লাসের মধ্যে আছে সতর্কতাও। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে যুদ্ধবিরতি। দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তেজনা তো যে কোনো মুহূর্তেই নতুন সংঘাত-সংঘর্ষে মোড় নিতে পারে।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস মিসরের মধ্যস্থতায় এই অস্ত্রবিরতি মেনে নিয়েছে কিছু শর্তে। ওইসব শর্ত লংঘন হলে আবারও রকেট হামলা চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত তেল আবিব এটি মেনে চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত হামাসও তা বাস্তবায়ন করবে।
হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধানের গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা তাহের আল-নুনু গাজায় সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় হামলা বন্ধের পাশাপাশি আল-আকসা মসজিদ ও শেখ জাররাহ এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি ইসরাইল দিয়েছে তা যতক্ষণ পর্যন্ত মেনে তেল আবিব চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত হামাসও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করবে।
এই শর্ত দেওয়ার মাধ্যমে হামাস মূলত বোঝাতে চেয়েছে, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত সংঘর্ষে তারা শক্তিশালী অবস্থানে ছিল এবং ইসরাইল প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে তাকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।