ইতালির কারাগারগুলোতে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ
করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ ঝুঁকছেন ধর্মের প্রতি। ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে চলার প্রতি বাড়ছে আগ্রহ। একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সরকার নাগরিকদের এমন উদ্যোগে সাড়াও দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইতালির সরকার সে দেশের সব কারাগারে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপের পরসিংখ্যান মতে, ২০১২ সালে ইতালিতে মুসলমানের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ। যা মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ। তবে পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে ইতালিতে মুসলমানের হার ক্রমবর্ধমান। তাদের মতে ২০২০ সালে মুসলমানের হার ৪.৯ শতাংশ এবং ২০৫০ সালে তা ৯.৫ শতাংশে উন্নীত হবে।
ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী ইতালিতে বসবাস করলেও ইসলামকে ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না রাষ্ট্রটি। সেখানে মাত্র আটটি স্বীকৃত মসজিদ রয়েছে। ২০০৮ সালের পর বহু মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ইতালিতে ৮০০ নামাজের স্থান রয়েছে। যাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ বলা যায়।
মে মাসের শেষ সপ্তাহে করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা দেশটির মসজিদ ও প্রার্থনাকক্ষগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে ও ইউসিওআইআইয়ের প্রতিনিধি দলের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির আলোকে নতুন সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।
ইতালির বিচার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইতালির কারাগারে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবার জন্য সঠিকভাবে ধর্মপালনের সুযোগ করে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী ইউসিওআইআই ইতালিতে ইমামের দায়িত্ব পালনকারীদের একটি তালিকা দেবে, যারা সারা দেশের কারাগারের মুসলিম বন্দিদের ধর্মীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন এবং তাদের নামাজের ইমামতি করবেন। কর্মক্ষেত্র নির্বাচনে ইমামদের মতামত নেওয়া হবে।
ইতালীয় মুসলিমদের নেতা লাফরাম আলী বলেন, এটি খুবই স্বস্তিকর বিষয়। নতুন সমঝোতা চুক্তির আলোকে ইতালির সব কারাগারে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে। এটি মূলত পাঁচ বছর আগের একটি প্রজেক্টের সুফল, যার অধীনে ইতালির আটটি কারাগারে শুরু হয়েছিল ধর্ম শিক্ষা দেওয়া।
২০১৫ সালে ইতালির কয়েকটি কারাগারে মুসলিম বন্দিদের নামাজের জন্য কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে একত্রে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ ছিলো না। তবে রমজানের মতো বিশেষ সময়ে কর্তৃপক্ষ জামাতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়।