আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তি সম্পাদন
নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে সামরিক বিরোধের অবসান ঘটাতে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান ও রাশিয়া।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ চুক্তি অনুসারে সংঘাতের সময় কেড়ে নেওয়া নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের কাছেই থাকছে। এ ছাড়া কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সংলগ্ন আরও কিছু অঞ্চল থেকে আর্মেনিয়া সরে আসতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়া এবং আজারবাইজান দুই দেশই এই চুক্তি সাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে এক প্রতিক্রিয়ায় আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাসিনিয়ান চুক্তিটিকে তার দেশ ও জনগণের জন্য ‘অবিশ্বাস্যভাবে বেদনাদায়ক’ বলে অভিহিত করেন।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এই চুক্তিকে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্ববহ বলে উল্লেখ করেন। এদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠকে আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ বলেছেন, স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় বিবৃতি সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল প্যাসিনিয়ান জানান চুক্তিটি তার ও আর্মেনিয়ার জনগণের জন্যে অবর্ণনীয় বেদনাদায়ক। তিনি আরও জানান, বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থির বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এমন পরস্থিতিতে এইটি সর্বোত্তম সমাধান।
আর্মেনিয়ার দখলে থাকা দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শুশা ( আর্মেনিয়ানদের কাছে শুশি নামে পরিচিত ) আজেরি বাহিনী দখল করে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই চুক্তি সাক্ষরিত হল। এদিকে সোমবার( ৯ নভেম্বর) আজারবাইজান জানায়, তারা আরো কয়েক ডজন জনপদ দখলে নিয়েছে।
এদিকে এই শান্তিচুক্তি হওয়ার পর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কার্ফিউ স্বত্তেও হাজার হাজার মানুষ বিজয় উদযাপন করতে রাস্তায় নেমে পরেছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরার প্রতিবেদক ওসামা বিন জাভিদ। শান্তিচুক্তি সাক্ষরের পর আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভেনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ফেসবুক পোস্টের বিশ মিনিট পর এক দল বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে।
আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দুটি স্বাধীন দেশে পরিণত হয়। কয়েক দশক ধরে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ চলছে।