কক্সবাজারে গোলাগুলিতে ২ রোহিঙ্গা নিহত
পাঁচদিনের ব্যবধানে বান্দরবানের ঘুমধুমে বিজিবির সঙ্গে আবারো গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ের পর দুই রোহিঙ্গা ইয়াবা কারবারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি এলজি বন্দুক, ২ রাউন্ড গুলিসহ ৪০ হাজার পিচ ইয়াবা ।
শনিবার (১৭ নভেম্বর) গভীর রাতে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩৪ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে বাংলাদেশের প্রায় দুই কি: মি: অভ্যন্তরে চেয়ারম্যানের নতুন ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শনিবার রাতে ৩৪ বিজিবি নিয়ন্ত্রিত তুমব্রু বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টহলদল রাতে সীমান্ত পাহারারত অবস্থায় রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিপরীত দিকে কিছু লোক দেখতে পায়। বিজিবি তাদের গতিরোধ করতে চাইলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এসময় বিজিবিও পাল্টা গুলি চালালে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পাশের উখিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষনা করেন।
ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইমন চৌধুরী জানান দুই ব্যক্তি হাসপাতালে মৃত হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে মৃতদেহগুলোর সুরুতহাল নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই দুই ব্যক্তির লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। তাদের নাম পরিচয় জানা না গেলেও এই দুই ব্যক্তি বিজিবির সাথে ইতোপূর্বে ঘটনার সাথে জড়িত বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে বিজিবি ও অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ওই দিন অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয় বিজিবির দুই সদস্য ফরিদ উদ্দিন ও মৃত্যুঞ্জয়। এই ঘটনায় ১১নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় বিজিবির সদস্য আবদুল লতিফ বাদী হয়ে জিআর-৩৪৮ একটি মামলা রুজু করে। ওই মামলায় দিলদার হোসেনকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নামসহ ১০-১৫ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়। শনিবার রাতে বিজিবির সঙ্গে পুনরায় গুলি বিনিময়কালে নিহত আলী হোসেন (২২), ইয়াছিন আলী (৩০) ইতোপূর্বে থানায় দায়ের করা মামলার ৪ ও ৫ নম্বর আসামী ছিলেন। তারা দুইজনই উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির-২ এ বসবাসরত রোহিঙ্গা নাগরিক ।
তবে এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, গত সোমবার (১১ নভেম্বর) সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে গোলাগুলির বিষয়ে বিজিবি বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিল। তবে শনিবার (১৭ নভেম্বর) রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুই ব্যক্তির বিষয়ে বিজিবির কাছ থেকে এখনো কোন তথ্য পায়নি।
এদিকে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, মিয়ানমার থেকে নিষিদ্ধ ইয়াবা আনার পথে বিজিবির সাথে গুলাগুলিতে দুই ব্যক্তির লাশ এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক ও ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান তুমব্রু সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুই ব্যক্তি ইতোপূর্বে সীমান্তে বিজিবির উপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। থানায় দায়ের করা ৯ আসামির মধ্যে তারা ৪-৫ নম্বর আসামী ছিলেন।